দেশ অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে : সৈয়দ আশরাফ
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ অশুভ শক্তির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। দেশের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে। খালেদা জিয়া রাজাকারদের রক্ষা করার জন্য দেশের শত শত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছেন, গাড়ি পুড়িয়েছেন। তাঁর এই অপকর্ম দেশের মানুষ আজও ভোলেনি।
আজ মঙ্গলবার ঢাকায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিকে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করছে আওয়ামী লীগ।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘কিসের জন্য খালেদা জিয়া আন্দোলন করেছেন, সেটাই হলো একমাত্র প্রশ্ন। ৫ জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আপনি [খালেদা জিয়া] ৬৪ জন মানুষকে হত্যা করেছেন। ১ হাজার ৫০০ লোককে আহত করলেন। অর্থনীতিতে ক্ষতি হলো ১৭ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। ৭০০টি গাড়ি পোড়ালেন। সমস্ত ভর্তি পরীক্ষা আপনি বন্ধ করলেন। এমনকি এসএসসির টেস্ট পরীক্ষা চলছিল। সেটাও আপনি বন্ধ করলেন। কিসের জন্য? গণতন্ত্রের জন্য? গণতন্ত্রের জন্য মানুষ হত্যা করতে হয় না। গণতন্ত্রের জন্য গাড়ি পোড়াতে হয় না। আপনি চেয়েছিলেন বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র করতে। এ দেশকে যাতে এগিয়ে না নেওয়া যায় সেই উদ্দেশ্যে রক্তের হোলি খেলা খেলেছেন। এই বাংলাদেশের মাটিতে বাঙালি জাতি কোনোদিনই আপনার অপকর্ম ভুলে যাবে না। আসুন আমরা শান্তিপূর্ণ রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই। নির্বাচন হবে, সুষ্ঠ নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে একটি জীবনও হত্যা করার প্রয়োজন হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নীতিতে বিশ্বাস করেন। আমরাও সেই নীতিতে বিশ্বাস করি।’
এ সময় সৈয়দ আশরাফ আরো বলেন, ‘আজকের এই সমাবেশে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে খালেদা জিয়ার জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আরো এগিয়ে যাবে।’
বক্তব্য শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আসছে ১০ জানুয়ারি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি সমাবেশের ঘোষণা দেন।
এর আগে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, ‘৫ জানুয়ারি নির্বাচন না হলে দেশ সংবিধান শূন্যতায় পরিণত হতো। ও নির্বাচনের কারণে দেশের গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে। রাজাকারদের মুক্ত করার জন্য খালেদা জিয়া সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েছেন। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন না হলে বাংলাদেশ রাজাকারের দেশে পরিণত হতো। বঙ্গবন্ধুকন্যার দৃঢ়তার মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে এবং দেশে আজ উন্নয়নের জোয়ার বইছে। ২০১৯ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নতশীল দেশে পরিণত হবে।’
ডিএমপির দেওয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে আওয়ামী লীগের এই সমাবেশ শেষ হয়েছে।
বিকেল ৩টায় সমাবেশের শুরুতে বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান সোহাগ। এরপর বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজি সেলিম, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মতিন খসরু, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ আজিজ, এনামুল হক শামীম, বদিউজ্জামান ভূঁইয়াসহ বিভিন্ন স্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট থেকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় পর্যন্ত সমাবেশের জন্য সীমানা বেঁধে দেয়। এ ছাড়া রাজধানীর রাসেল স্কয়ারেও আরেকটি সমাবেশ করার অনুমতি পায় আওয়ামী লীগ।