মীর কাসেমের আপিল শুনানি ২ ফেব্রুয়ারি

জামায়াতে ইসলামীর নেতা দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাসেম আলীর আপিলের শুনানির জন্য আগামী ২ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
আজ বুধবার সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেছেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
এর আগে মীর কাসেম আলীর প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন আপিল শুনানির জন্য আদালতের কাছে সময় চান। আদালত তা মঞ্জুর করে ২ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর মীর কাসেম আলী আপিল করেন। মীর কাসেম আলী ১৬৮টি কারণ দেখিয়ে ফাঁসির আদেশ থেকে খালাস চেয়ে আবেদন করেন।
আটজনকে নির্যাতনের পর হত্যা ও মরদেহ গুম এবং ২৪ জনকে অপহরণের পর চট্টগ্রামের বিভিন্ন নির্যাতন কেন্দ্রে আটকে রেখে নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী ১৪টি অভিযোগে অভিযুক্ত হন মুক্তিযুদ্ধকালে জামায়াতের কিলিং স্কোয়াড আলবদর বাহিনীর তৃতীয় শীর্ষ নেতা ও ইসলামী ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদক মীর কাসেম আলী। এ ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি প্রমাণিত হয়। বাকি চারটি অভিযোগ প্রসিকিউশন সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পারেননি।
১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি, অর্থাৎ ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৯, ১০, ১১, ১২ ও ১৪ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং চারটি অর্থাৎ, ১, ৫, ৮ ও ১৩ নম্বর অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেননি বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়।
১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনসহ মোট আটজনকে হত্যার দায়ে কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ১১ নম্বর অভিযোগে শহীদ কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিনসহ ছয়জনকে ও ১২ নম্বর অভিযোগে রঞ্জিত দাস লাতু ও টুন্টু সেন রাজুকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়। ১১ নম্বর অভিযোগে সর্বসম্মত ও ১২ নম্বর অভিযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ফাঁসির রায় দেন বিচারপতিরা। ফাঁসি ছাড়াও প্রমাণিত অন্য আটটি অভিযোগে আরো ৭২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ হয় মীর কাসেম আলীর। এর মধ্যে প্রমাণিত ফারুককে অপহরণ-নির্যাতনে (২ নম্বর অভিযোগ) ২০ বছর ও নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে অপহরণ করে ডালিম হোটেলে নিয়ে নির্যাতনের (১৪ নম্বর অভিযোগ) দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড পান তিনি। এ ছাড়া অপহরণ, আটক ও নির্যাতন-সংক্রান্ত ৩, ৪, ৬, ৭, ৯ ও ১০ নম্বর অভিযোগে সাত বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। প্রমাণিত না হওয়া ১, ৫, ৮ ও ১৩ নম্বর অভিযোগে খালাস পান মীর কাসেম আলী। এগুলো ছিল অপহরণ, আটক ও নির্যাতন-সংক্রান্ত অভিযোগ।