মাটিলায় কান্না, বিজিবির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/01/31/photo-1454257230.jpg)
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ভারত সীমান্তের মাটিলা গ্রামে একজন নিহতের ঘটনায় আজ রোববার বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন গ্রামের লোকজন। এ সময় বিজিবির গুলিতে নিহত রফিকুল ইসলামের স্ত্রী তিন মাসের সন্তান কোলে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মাটিলা বাজারে নিজ চায়ের দোকানের সামনে বিজিবির গুলিতে নিহত হন ওই গ্রামের আবদুল মালেক চৌধুরীর বড় ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩০)। ভারত থেকে আনা গরু নিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে জুলুলী বিজিবি ক্যাম্পের জওয়ানদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার সময় গুলি বর্ষণ করলে ঘটনাস্থলে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে রফিকুল নিহত হন। রাতেই নিহতের লাশ মহেশপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বিজিবি।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন একই গ্রামের ফিরোজ, বাবলু, আতিকুলসহ চারজন। আহতদের মধ্যে ফিরোজকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর তাঁর দেহে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
এদিকে আজ সকাল থেকে মাটিলা গ্রামে ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সাড়ে ১০টার দিকে শত শত নারী-পুরুষ ঝাঁড়ু হাতে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভের সময় ক্যাম্প থেকে বিজিবি সদস্যরা ছুটে আসেন। তাঁরা বাঁশি বাজিয়ে উপস্থিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। এতে বিক্ষোভ আরো ছড়িয়ে পড়ে।
জুলুলী ক্যাম্পে অবস্থানরত যশোর বিজিবি ২৬ ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এসে তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
নিহত রফিকুলের বাবা আবদুল মালেক অভিযোগ করেন, রফিকুলকে গুলি করার পরও বিজিবি সদস্যরা টেনেহিচড়ে ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যান। মারা যাওয়ার পর বাজারের বটগাছের কাছে ফেলে রাখেন। ঘটনাস্থলে রক্তের দাগ এখনো মুছে যায়নি।
নিহত রফিকুলের স্ত্রী রোজিনা তিন মাসের শিশু কোলে নিয়ে স্বামী হত্যার বিচার দাবি করেছেন। তিনি বার বার কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ঘটনার বিষয়ে আজ দুপুরে বিজিবি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এলাকায় যারা এ ঘটনা উসকে দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ভারত থেকে গরু চোরাকারবারিদের সংঘর্ষের সময় আত্মরক্ষার জন্য গুলি ছুড়লে রফিকুল নিহত হন বলে দাবি করেন বিজিবির এই কর্মকর্তা।
এদিকে আজ দুপুরে মহেশপুর থানা পুলিশের হেফাজতে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রফিকুলের ময়নাতদন্ত করা হয়। এশার নামাজের পর লাশ মাটিলা গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।