চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া পৌরসভার সুচক্রদন্দী গ্রামে প্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগ করেছে তার পরিবার। ধর্ষণের পর মেয়েটি এখন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবন্ধী পরিবারের সদস্যরা এ অভিযোগ করেন। এ সময় চট্টগ্রামের কয়েকটি প্রতিবন্ধী অধিকার ও মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ধর্ষনের শিকার কিশোরীর প্রতিবন্ধী বাব তপন দে ও মা মঞ্জু দে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবন্ধী কিশোরীর মা বলেন, ‘আমি অসুস্থ স্বামী এবং প্রতিবন্ধী মেয়েকে বাসায় রেখে প্রতিদিন কাজের সন্ধানে  ঘরের বাইরে যাই। ২০১৫ সালের ২১ জুন আমার স্বামীর অনুপস্থিতিতে প্রতিবেশী পিয়াল দে (২০), ইমন দে (২০), জনি দে (২৬), সুজন দে (২২), সজীব দে (২২) ও নয়ন দে (২২) জোরপূর্বক ঘরে ঢুকে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে। এর পর আমার মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।’

২০১৫ সালের ২১ জুন ঘটনাটি ঘটলেও কিশোরীর মা জানতে পারেন অনেক দেরিতে। ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে ধর্ষিত কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চট্টগ্রামের রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে জানালে কিশোরীর পক্ষে পরিবার চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ মামলা দায়ের করেন। তবে মামলা হওয়ার এক মাস চারদিন পার হয়ে গেলেও এখনো কোনো আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন কিশোরীর মা।

এদিকে মামলার পর স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর রূপক সেন মামলা তুলে নিতে হুমকিধমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে কিশোরীর মা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘কাউন্সিলর রূপক সেন আমাকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন যেন মামলা প্রত্যাহার করে নেই। পটিয়া কলেজে পড়ুয়া আমার আরেক মেয়ের মোবাইল নম্বর ও নাম ঠিকানা চেয়েছে কাউন্সিলর। এমনকি টাকা দিয়ে মামলা তুলে নিতে প্রস্তাব দিলে তাতে রাজি না হলে পুড়িয়ে মারার হুমকি দিয়েছে কাউন্সিলর রূপক সেন।’

ধর্ষকরা প্রভাবশালী হওয়ায় থানা পুলিশও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে জানান সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়া প্রতিবন্ধী কয়েকটি সংগঠনের কর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে কিশোরীর মা তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা ও ধর্ষণকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন নারী যোগাযোগ কেন্দ্র চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সংগঠক নাদিরা সুলতানা, এলায়েন্স অব আরবান ডিপিএস চিটাগং-এর সংগঠক জাহানারা হেনা ও উৎস-এর সংগঠক আবুল হাশেম খান।