রাষ্ট্র আর জনগণের নির্যাতনে চিকিৎসকরা স্যান্ডইউচ

‘দেশের হাসপাতালগুলোর অবকাঠামোগত অবস্থা ও উপকরণ অনুযায়ী যে পরিমাণ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার কথা তার চেয়ে অনেক বেশি রোগীর সেবা দেন চিকিৎসকরা।’
আজ দুপুরে খুলনা প্রেসকাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনা জেলার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম। এ সময় তিনি জানান, বিএমএ খুলনা জেলা শাখা আপাতত আর চিকিৎসক ধর্মঘটে যাবে না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শেখ বাহারুল আলম বলেন, চিকিৎসক চাহিদার বিপরীতে রাষ্ট্রের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক অসঙ্গতি রয়েছে। যেমন ধরেন, খুলনা মেডেকেল কলেজ হাসপাতালে ২৫০ শষ্যার অবকাঠামো, জনবল, প্রযুক্তি ও উপকরণ রয়েছে। কিন্তু এখানে প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছে সাড়ে সাতশর বেশি রোগী।
“এর মধ্যেই চিকিৎসকরা লাঞ্ছিত হন। লাঞ্ছিত চিকিৎসকরা বিচার চেয়েও পান না। তাঁরা নিরাপত্তা পান না, মর্যাদা পান না। আর লাঞ্ছিত চিকিৎসকরা যখন এর প্রতিবাদে চিকিৎসাসেবা থেকে বিরত থাকেন, তখনই রাষ্ট্র ও তার কর্ণধাররা কৌশল অবলম্বন করে বার বার বলতে থাকে, ‘রোগীকে জিম্মি করে চিকিৎসকদের এই প্রতিকার চাওয়া খুবই অন্যায় অপরাধ।’”
বিএমএ খুলনা জেলার সভাপতি বলেন, ‘চিকিৎসকরা এখন হাসপাতালগুলোতে অত্যাচার- নির্যাতনে স্যান্ডইউচ হয়ে আছেন। যার ওপরে রাষ্ট্র আর নিচে হচ্ছে জনগণ।’
এ সময় শেখ বাহারুল আলম আরো বলেন, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুল্লাহ হেল মামুনকে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও তাঁর সহযোগীরা মেরে আহত করেন। এ ঘটনায় চিকিৎসক নিজে বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মালালা দায়ের করেন। এ মামলায় গতকাল বুধবার চারজন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
অপর আসামি চেয়ারম্যান এফ এম অহিদুজ্জামান উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। যেহেতু আসামিরা আইনের আওতায় এসেছেন তাই আপাতত চিকিৎসকরা আর নতুন করে ধর্মঘট করবেন না বলে জানান শেখ বাহারুল আলম।
চিকিৎসক লাঞ্ছিতের ঘটনায় গত সপ্তাহে দুই দফায় ৫২ ঘণ্টা খুলনা জেলার সব সরকারি- বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসকরা ধর্মঘট পালন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন গাজী মিজানুর রহমান, বিএমএ খুলনার সাধারণ সম্পাদক মেহেদী নেওয়াজ, শওকত লস্কর প্রমুখ।