রায়ে প্রার্থিতা পেলেও প্রচারে বাধা দিচ্ছে আ.লীগ
হাইকোর্টের রায় পেয়েও নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারছেন না শিবচরের পাচ্চর ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজি মো. শাখাওয়াত হোসেন নান্নু মোল্লা। প্রতিপক্ষের সমর্থকদের প্রচারে কাদা, মাইক ছিনিয়ে নেওয়া, ব্যানার ছিড়ে ফেলা, কর্মী অপহরণ, গালিগালাজ ও ক্রমাগত এলাকা ছাড়ার হুমকির মুখে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তিনি।
আজ শনিবার গণমাধ্যমের কাছে পাঠানো এক লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন নান্নু মোল্লা।
লিখিত বক্তব্যে বিএনপির এ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ও ধানের শীষ প্রতীক পেয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি শিবচর উপজেলার পাচ্চর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে আমি মনোনয়নপত্র জমা দেই।
২৩ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র বাছাইকালে নান্নু মোল্লার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আপিল করেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি আপিলের শুনানির দিন ধার্য হলেও ২৮ ফেব্রুয়ারি শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং নান্নু মোল্লার আপিল খারিজ হয়ে যায়।
পরবর্তীতে নান্নু মোল্লা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। ৮ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম শহীদুল ইসলামের দ্বৈত বেঞ্চ হাজি নান্নু মোল্লার পক্ষে রায় দেন। গত ১০ মার্চ ওই রায়ের কাগজপত্র শিবচর নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌঁছালে উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা নান্নু মোল্লাকে নির্বাচন করার অনুমতি দেন।
কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেয়ে নান্নু মোল্লা ওইদিন বিকেলেই নির্বাচনী প্রচারে নামেন। সন্ধ্যার আগে প্রতিপক্ষের লোকজন প্রচারে বাধা দিয়ে তাঁর ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে এবং মাইক ছিনিয়ে নেয়।
লিখিত বক্তব্যে নান্নু মোল্লা অভিযোগ করেন, 'গতকাল শুক্রবার বিকেলে আবার প্রচারে নামলে বাহাদুরপুর মোড় থেকে আমার ছেলে আবুল কালামকে ধরে নিয়ে যায়। বিষয়টি শিবচর থানায় জানালে পুলিশ রাতে তাকে উদ্ধার করে। রাতে একই কায়দায় আমার দুই কর্মী রফিক ও কালামকে অপহরণ করলে পুলিশের সহায়তায় তারাও উদ্ধার হয়।'
নান্নু মোল্লা অভিযোগ করেন, ‘শুক্রবার বিকেলে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী দেলোয়ার হাওলাদারের লোকজন ৩৫-৪০টি মোটরসাইকেল যোগে এসে আমার বাড়িতে ভাঙচুর করে। এ সময় তারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে যায়। আমি এখন আমার নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছি। নির্বাচনী প্রচার কাজ চালাতে পারছি না। অফিসে অভিযোগ দিব তাও পারছি না। আমি মিডিয়ার সহযোগিতা চাই।’
শিবচর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আজমল হোসেন বলেন, ‘ছোটখাটো ঝামেলা হয়েছিল। পুলিশের সহযোগিতায় তা আমরা মিটিয়ে দিয়েছি।’
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন বলেন, ‘ঘটনা সত্য নয়। এ রকম হলে আমি জানতাম। প্রার্থী আমাদের কিছু জানায়নি।’
‘নির্বাচন কর্মকর্তা জানালেন, পুলিশের সহযোগিতায় ঝামেলা মেটানো হয়েছে আর আপনি বলছেন আপনি জানেন না’- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘তাহলে হয়তো ছোট ঘটনা। টহল পুলিশ আছে, হাইওয়ে পুলিশ আছে, হয়তো কেউ যেতে পারে।’
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার আজ শনিবার সন্ধ্যায় এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। নান্নু মোল্লা আমার বন্ধু মানুষ। সমস্যা হলে আমি গিয়ে তাঁর পোস্টার টাঙিয়ে দিয়ে আসব।’