পাবনায় কলেজছাত্রীর ধর্ষকদের বিচারের দাবি

পাবনায় কলেজছাত্রী গণধর্ষণের তিন দিনেও আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভে ফুসছে এলাকাবাসী। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকায় পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করছে না বলে হিন্দু নেতারা অভিযোগ করেছেন।
এদিকে গণধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রীর চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে মঙ্গলবার সকালে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ছুটে যান পাবনার জেলা প্রশাসক রেখা রাণী বালো। তিনি কলেজছাত্রীর চিকিৎসার সার্বিক খোঁজ খবর নেন এবং উন্নত চিকিৎসা দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পাবনা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা রোটারিয়ান প্রভাষ চন্দ্র ভদ্র, বাদল চন্দ্র ঘোষ, সৌমেন সাহা ভানু, কোমল চন্দ্র দাশ, সঞ্জয় বসাক, দিপংকর সরকার জিতু, সুনীল সরকার, অপু সাহা। এ ছাড়া সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড.হুমায়ুন কবির মজুমদার ছাত্রীর খোঁজখবর নেন।
অপরদিকে সাঁথিয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন দাবি করেছেন, পুলিশ পুন্ডরিয়া গ্রামের চাঁদ আলীকে (২৭) সন্দেহজনক আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রীর পরিবার যাদের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন তাদের কেউই ধরা পড়েনি।
স্থানীয় হিন্দু নেতারা দাবি করেছেন, আসামিরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকায় এবং প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ প্রশাসন তাদের গ্রেপ্তারে অনেকটা নীরব ভূমিকা পালন করছে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছেন। নেতারা জানান, এ ঘটনার বিচার দাবিতে বুধবার সকালে শহরের প্রধান সড়কে বিশাল মানববন্ধন গড়ে তোলা হবে।
এদিকে এডওয়ার্ড কলেজের ছাত্রছাত্রীরা গণধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে।
গত রোববার রাতে সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নে পাবনা এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের এক ছাত্রী (২১) গণধর্ষণের শিকার হয়।
পুলিশ ও ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর কাকা জানান, করমজা ইউনিয়নের একটি বাড়িতে পাঁচ দিনব্যাপী কীর্তন উৎসব চলছিল। রোববার ওই ছাত্রীর বাড়ির সবাই কীর্তন দেখতে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হিন্দু ওই ছাত্রী বাড়িতেই ছিলেন। এ সময় ওত পেতে থাকা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ফরিদ, হাফিজুল, আদেল ও ফজলু বাড়িতে ঢুকে। তারা ছাত্রীকে অস্ত্র দেখিয়ে মুখ বেঁধে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর পাশের খালে নিয়ে গণধর্ষণ করে। একপর্যায়ে মেয়েটি অচেতন হয়ে পড়লে ধর্ষকরা তাঁকে ফেলে চলে যায়। রাত ১০টার দিকে কীর্তন শেষে লোকজন ফেরার পথে মেয়েটির গোঙানির শব্দ শুনে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। পরে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাঁকে পাবনা মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানায় ফরিদ, হাফিজুল, আদেল ও ফজলুকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় হিন্দু পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান, এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে জোর প্রচেষ্টা চলছে।