বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের খোঁজে গাইবান্ধায় পুলিশ অভিযানের বিষয়টিকে ‘রসিকতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহবুবুর রহমান।

আজ শুক্রবার সকালে সালাহ উদ্দিন আহমেদের পরিবারের সাথে দেখা করতে গিয়ে এ বিএনপি নেতা বলেন, ‘রসিকতা বন্ধ করে সরকারের দায়িত্ব  খুঁজে বের করা।’ এ বিষয়ে বিএনপির সহযোগিতার দরকার হলে তা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। 

মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সালাহ উদ্দিন আহমেদের নিখোঁজের ঘটনা দেশের আইনশৃঙ্খলার যে চিত্র তারই প্রতিফলন।’ তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের খবর দিয়ে বিভ্রান্তিও হচ্ছে।

ওখানকার যে এসপি, সে বলছে, টেলিফোন আসছিল চিটাগাং থেকে। তো, চিটাগাং-এর মানুষ কেমনে বলছে যে, গাইবান্ধার দুর্গম চরে সে আটকা পড়ে আছে! এটা ফলস, ফিকটিশাস (মিথ্যা অর্থে) একটা কল। এটা তো একটা... কী ধরনের একটা রসিকতা? একটা প্র্যাকটিক্যাল জোক, একটা কৌতুক এটা। এগুলো থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। সরকারকেই এর উদ্যোগ নিতে হবে।’

এ সময় সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই সালাহ উদ্দিন আহমেদকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীকে অক্ষত অবস্থায় যেভাবে তারা নিয়ে গেছে, আমি সবার কাছে দাবি জানাচ্ছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছেও আমি দাবি জানাচ্ছি, বিনীতভাবে অনুরোধ করছি, উনি যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন, অবিলম্বে আমার স্বামীকে অক্ষত অবস্থায় জনসম্মুখে হাজির করার জন্য।’ 

উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছিল পুলিশ। গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) আশরাফুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছিলেন, সন্ধান পাওয়ার খবর পেয়ে ফুলছড়ি থানার দুর্গম চরাঞ্চলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

এরপর রাত ১২টার দিকে ফুলছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান এনটিভি অনলাইনকে জানান, সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান পাওয়ার ‘খবর ভিত্তিহীন’।

১০ মার্চ থেকে ‘নিখোঁজ’ রয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তাঁর পরিবার ও দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে।

তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করা হয়নি বলে দাবি করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান চেয়ে গত ১১ মার্চ রাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গুলশান ও উত্তরা পশ্চিম থানায় যান তাঁর স্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। তবে কোনো থানাই তাঁর জিডি গ্রহণ করেনি।

গতকাল সকালে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি দেন তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। এতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করারও আবেদন জানান।

১২ মার্চ হাসিনা আহমেদের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে কেন খুঁজে বের করা হবে না এবং রোববার তাঁকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলের ওপর শুনানি দিন ধার্য করা হয়েছে ৮ এপ্রিল।