সালাহ উদ্দিন হেসে বললেন, পান আগেও খেতাম
‘হঠাৎ কি পানের নেশা করলেন?’-জিজ্ঞেস করতেই একগাল হাসেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। জবাবে বলেন, ‘আমার বাংলাদেশে যেখানে বাড়ি ছিল, সেখানে প্রচুর পান চাষ হতো। পান আমি আগেও খেতাম।’
বুধবার ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ের আদালতে হাজির হওয়ার আগে সালাহ উদ্দিনের পান খাওয়া নিয়ে রসিকতা করছিলেন স্থানীয় এক সাংবাদিক। ওই সময় কাঁচা সুপারি দিয়ে পান চিবোচ্ছিলেন বিএনপির এ নেতা।
দুই মাসেরও বেশি সময় আগে শিলংয়ে অসুস্থ, গোমড়ামুখো যে সালাহ উদ্দিনকে দেখা গিয়েছিল, আজ তার বিপরীত চিত্রই দেখা গেছে। আদালতে ঢোকার আগের পুরো সময়টাই ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন। জানিয়েছেন শিলংয়ের রোজনামচা আর নিত্যকার ভাবনার কথা।
‘আমি নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের খেলা (ক্রিকেট) দেখি। বাংলাদেশের ক্রিকেট দেখে আমি গর্বিত,’ বলেন সালাহ উদ্দিন।
বাংলাদেশের তরুণ দুই তুর্কি মুস্তাফিজুর রহমান ও সৌম্য সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ ক্রিকেট বিশ্বে ক্রমশ পরাশক্তিতে পরিণত হচ্ছে।’
ঈদের দিন শিলংয়ের ঈদগাহ মাঠে নামাজ পড়েছেন। স্বজন ছেড়ে শিলংয়ে কেমন সময় কাটছে?-জিজ্ঞেস করলে সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘শিলংয়ের পরিবেশ অত্যন্ত ভালো। ঐতিহাসিক সৌন্দর্যের জায়গা এই শিলং। ভালোই লাগছে, তবে এবারের ঈদে স্বজন-পরিজন ছাড়া ঈদ কাটাতে বড্ড খারাপ লেগেছে।’
শারীরিক অবস্থার কথা জিজ্ঞেস করলে সালাহ উদ্দিন বলেন, আগের থেকে কিছুটা সুস্থ আছেন তিনি। তবে এখনো তিনি চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকদের পরামর্শেই চলছেন। আপাতত বড় কোনো অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন নেই।
এ আলাপচারিতার একপর্যায়ে শিলং আদালতে ঢোকেন সালাহ উদ্দিন। সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি পরিহিত সালাহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস পি মহান্ত।
চলতি বছরের ১২ মে শিলংয়ের গলফ ক্লাব এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন সালাহ উদ্দিন আহমেদ। যদিও তাঁর দাবি, তিনি স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে ধরা দেন। তারপর তাঁকে একাধিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
২২ মে সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ তাঁর স্বামীর উন্নত চিকিৎসার দাবি জানিয়ে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিলং সেশন কোর্টে আবেদন জানান। যদিও সেই আবেদন ২৯ মে খারিজ করে দিয়ে আদালত সালাহ উদ্দিন আহমেদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। এরপর সালাহ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে শিলং থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এম লামহারে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিট দাখিলের দুদিনের মাথায় গত ৫ জুলাই শর্তসাপেক্ষে শিলং আদালত থেকে জামিন পান সালাহ উদ্দিন আহমেদ। জামিনের সেই শর্তে প্রতি সপ্তাহে তাঁকে শিলং থানায় হাজিরা দিতে হবে। শিলং শহর ছেড়ে কোথাও যেতে পারবেন না তিনি। এর পর থেকেই ঘর ভাড়া নিয়ে শিলংয়ে আছেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ।