শ্রীবরদীর মেয়রকে বরখাস্তের সুপারিশ, মামলার নির্দেশ
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলাকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) প্রাণনাশের হুমকি, তাঁর ওপর হামলা ও প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে শেরপুরের শ্রীবরদী পৌরসভার মেয়র আবু সাঈদ চানকে বরখাস্ত করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশন। একই ঘটনায় মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উপস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনারদের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন শেরপুরের জেলা প্রশাসক ডা. এ এম পারভেজ রহিম।
গত ৩১ মার্চের দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে শ্রীবরদীতে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত হন ইউএনও হাবিবা শারমীন। এ সময় তাঁর গাড়ির চালকও আহত হন এবং গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ ব্যাপারে শেরপুরের জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে জেলা প্রশাসক ডা. এ এম পারভেজ রহিম ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে মেয়র আবু সাঈদের আচরণ অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত ও নির্বাচনী আচরণবিধি পরিপন্থী এবং স্থানীয় প্রশাসনের জন্য হুমকিস্বরূপ।’
চিঠির অনুলিপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়। চিঠিতে অভিযুক্ত মেয়রের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই আজ নির্বাচন কমিশন শ্রীবরদীর মেয়র আবু সাঈদকে বরখাস্তের সুপারিশ করে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে।
শ্রীবরদী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে সরকারি গাড়ি নিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন মেয়র আবু সাঈদ। বিষয়টি জানতে পেরে ইউএনও হাবিবা শারমীন মেয়রকে আচরণবিধি ভঙ্গ হয় এমন কাজ না করার জন্য বলেন। এ কথায় উল্টো মেয়র আবু সাঈদ ইউএনওর সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন।
ওই দিন নির্বাচন শেষে রাত ৮টার দিকে কাকিলাকুড়া ইউনিয়নে খামারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুর্বৃত্তরা প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখে। সংবাদ পেয়ে ইউএনও হাবিবা শারমীন তাঁদের উদ্ধার করতে যান। ফেরার পথে ইউএনওর গাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে ইউএনও আহত হন।
রাতেই হাবিবা শারমীন ঘটনার বিষয়ে শেরপুরের জেলা প্রশাসককে অবহিত করেন।
এ ব্যাপারে ইউএনও হাবিবা শারমীন বলেন, ‘আমার অভিযোগ আমি আমার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এখন বিষয়টি কর্তৃপক্ষ দেখবে।’
এদিকে এ ব্যাপারে জানার জন্য শ্রীবরদীর মেয়র আবু সাঈদ চানের মোবাইলে বারবার ফোন করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।