চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর মৃত্যু, লাঞ্ছনার পর কর্মবিরতি
মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে এক রোগী মারা গেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। আজ শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকদের লাঞ্ছিত করা হয়েছে দাবি করে আজ সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গুরুতর অসুস্থ রোগীরা। অনেক রোগী চিকিৎসা না পেয়ে দুপুরে হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার ভোর রাতে মাদারীপুর শহরের কলেজ রোড এলাকার লাল মিয়া শিকদারের স্ত্রী রেনু বেগমকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাইনুল ইসলাম রোগীকে ব্যবস্থাপত্র না দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রোগীর অবস্থার অবনতি হলে বারবার চিকিৎসককে ডাকলেও তিনি আসেননি। পরে চিকিৎসা না পেয়েই রেনু বেগম মারা যান।
কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাইনুল ইসলামের দাবি, ওই ঘটনায় রোগীর স্বজনরা তাঁকে মারধর করেছেন।
তবে রোগীর ছেলে ধীরাজ শিকদার দাবি করেন, চিকিৎসক মাইনুল ইসলামকে মারধর করা হয়নি। রোগী মারা যাওয়ায় উত্তেজিত হয়ে তাঁর সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়েছে।
ধীরাজ শিকদার আরো বলেন, ‘আমরা রোগীকে ভর্তি করে বারবার চিকিৎসকদের সাহায্য চাইলেও চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র না দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। তাঁর অবহেলায় আমার মা মারা গেছে। আমরা ওই চিকিৎসকের বিচার চাই।’
এদিকে দোষীদের বিচার দাবি ও হাসপাতালে স্থায়ী পুলিশ বক্স স্থাপনের দাবিতে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ধর্মঘট শুরু করেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
ওই কর্মবিরতির ফলে অসুস্থ রোগীরা সেবা না পেয়ে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। এক প্রসূতির স্বজন নাজমা বলেন, ‘আজ সারা দিন কোনো চিকিৎসাসেবা পাইনি। সিজারের রোগী চিকিৎসাসেবা না পেলে সমস্যা হতে পারে তাই নিয়ে আমরা টেনশনে আছি।’
সুফিয়া নামের আরেক রোগীর স্বজন বলেন, ‘নার্সদের কাছে শুনছি, ডাক্তারকে মারধর করছে তাই ডাক্তাররা রোগী দেখবে না। দোষ করলে একজন করছে তাই বলে সবাইকে জিম্মি করা কি ঠিক? আমরা কী দোষ করছি আমাদের রোগীকে কেন সেবা দেওয়া হয় না।’
মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. দিলীপ কুমার দাস বলেন, ‘চিকিৎসক লাঞ্ছিত করার ঘটনায় একজনকে আসামি করে মাদারীপুর সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীকে গ্রেপ্তার না করলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’