ইউপি ভোট গ্রহণযোগ্য হয়নি : বদিউল

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে না পেরে বর্তমান নির্বাচন কমিশন এখন অন্যের ওপর দায় চাপাতে চাচ্ছে। কিন্তু কোনো অজুহাতই হালে পানি পায় না। তারা সাংবিধানিক পদে থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
আজ শনিবার সকালে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে গণগবেষণা সমিতির (জিজিএস) ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সুজন সম্পাদক এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘এ নির্বাচন কখনই গ্রহণযোগ্য হয়নি। কারণ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি, সহিংসতা ও মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে।’
গত ২২ মার্চ নবম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপ শুরু হয়েছিল। গতকাল শনিবার শেষ হয় ছয়টি ধাপের ভোটযজ্ঞ। ইসির দেওয়া তথ্যমতে, এই ছয় ধাপে চার হাজার ৮৫ ইউপিতে ভোট হয়েছে। অনিয়মের কারণে বেশ কিছু ইউপির ফলাফল আটকে গেছে।
এবারই প্রথম ইউপিতে ভোটাররা সরাসরি রাজনৈতিকভাবে মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। অনিয়ম আর সহিংসতার দিক থেকেও এ নির্বাচন ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ইউপি নির্বাচনে শতাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সমালোচনা ছিল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভূমিকা নিয়েও। রেকর্ড হয়েছে বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হওয়ার ক্ষেত্রেও।
‘যেখানে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হয় না সেই সমাজে শান্তি বিরাজ কখনই সম্ভব নয়’ উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তরণের কথা থাকলেও সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে সেটার প্রতিফলন হয়নি। আর এর দায় নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে। নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের দায়িত্ব ছিল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা। যেহেতু তারা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছে তাই এ ব্যর্থতার দায় তাদের নিতে হবে।’
‘ব্যর্থ নির্বাচন কমিশনের বিতর্কিত নির্বাচনের কারণে আমাদের দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বিতর্কিত নির্বাচনের কারণে যে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ভেঙে পড়েছে সেই নির্বাচন কমিশন নিয়ে ক্ষমতাসীনদের ও আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভাবতে হবে, খুঁজতে হবে উত্তরণের পথ। না হলে, আমাদের দেশে সংকট আরো ঘণীভূত হবে।’
সুজন সম্পাদক এ সময় সংসদে একটি কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বিরোধী দল না থাকলে দেশে গণতন্ত্র থাকে না। একটি শক্তিশালী বিরোধী দল গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। বিরোধী দলকে রাজনীতি করার জায়গা করে দিতে হবে। যাতে করে বিরোধী দল মানুষের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে মানুষের কল্যাণে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে কাজ করতে পারে।’
সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক আব্দুর রউফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিশিষ্ট সংগঠক সিরাজুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান মুরাদ আলী, নারীনেত্রী নূরজাহান বেগম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ইউপির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।