বাতাস ঢোকানোর কারণেই সাগরের মৃত্যু, কর্মকর্তা রিমান্ডে
পেটে বাতাস ঢোকানোর কারণেই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের সুতা কারখানার শ্রমিক ১০ বছরের শিশু সাগর বর্মণের মৃত্যু হয়েছে। এমনটিই জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
এদিকে, এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া রূপগঞ্জের জোবেদা টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড কারখানার কর্মকর্তা নাজমুল হুদার সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে নারায়ণগঞ্জের আদালত।
সাগরের ময়নাতদন্ত সম্পন্নকারী ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ কে এম শফিউজ্জামান জানান, ময়নাতদন্তের আগে সাগরের পুরেো শরীর ফোলা ছিল। ময়নাতদন্তের সময় তার পেট থেকে গ্যাস বের হয়ে যায়।
এদিকে মর্মান্তিক এ ঘটনা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার ফোরকান আহমেদ।
সাগরের এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া কারখানার কর্মকর্তা নাজমুল হুদাকে সাতদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বাকি তিন আসামি হারুন অর রশিদ, আজাহার ইমাম সোহেল ও রাশেদুল ইসলাম এখনো পলাতক। তাদের গ্রেপ্তার ও দোষীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন। আজ বিকেলে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও এ দেশে শ্রমিকদের সঙ্গে ক্রীতদাসের মতো ব্যবহার করাসহ নানাভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, জোবেদা টেক্সটাইল মিলের মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় মূল আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। প্রকৃত আসামিদের পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না।
শ্রম আইন ভঙ্গ করে ওই প্রতিষ্ঠানে ব্যাপকহারে শিশু শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে তাদের নানাভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। বক্তারা অবিলম্বে শিশু সাগর হত্যার ঘটনায় প্রকৃত জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
নারায়ণগঞ্জ শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহাবুবুর রহমান ইসমাঈল, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আবু হাসান টিপু, বাংলাদেশ মোটরযান মেকানিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতা আবদুর রব।
এর আগে খুলনায় ১২ বছরের শিশু রাকিব হাওলাদারকে একই কায়দায় হত্যা করা হয়। গত বছরের আগস্টে খুলনার টুটুপাড়ার একটি ওয়ার্কশপে মোটরসাইকেলে হাওয়া দেওয়ার কমপ্রেসার মেশিন দিয়ে পেটে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যা করা হয় রাকিবকে। ওই মামলায় দুজনের ফাঁসির রায় হয়।