আমাকে চোখ বেঁধে এখানে ফেলে গেছে : সালাহ উদ্দিন
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/05/12/photo-1431452866.jpg)
বিএনপির ‘নিখোঁজ’ যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের রাস্তায় ইতস্তত ঘোরাফেরা করছিলেন! এ সময় তাঁর গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাঁকে আটক করে স্থানীয় পুলিশ। পরে তাঁকে মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্স (মিমহ্যানস) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
urgentPhoto
শিলংয়ের সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ এইচ খারখারান সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে বলেন, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের হাসপাতালে থাকা ‘নিখোঁজ’ সালাহ উদ্দিন আহমেদ পুলিশকে জানিয়েছেন, দুই মাস আগে ঢাকা থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়।
সালাহ উদ্দিন আহমেদের শিলং পুলিশের হাতে আটক হওয়ার খবর প্রথম ছেপেছিল শিলং টাইমস। আজ এনটিভির সঙ্গে টেলিফোন আলাপচারিতায় শিলং টাইমসের সম্পাদক এবং মেঘালয় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ও দুবারের বিধায়ক মানস চৌধুরী বলেন, ‘পুলিশ জানিয়েছে, উনাকে (সালাহ উদ্দিন আহমেদ) পাওয়া গেছে অজানা-অপরিচিত জায়গার মধ্যে। উনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং জিজ্ঞাসাবাদ করায় উনি কোনো উত্তর দিতে পারছেন না। তার পর লোকদের সন্দেহ হওয়ায় লোকেরা পুলিশকে ডেকে নিয়ে আসে। পুলিশ এসে উনাকে নিয়ে যায় থানায়।’
মানস চৌধুরী আরো বলেন, ‘এরপর পুলিশ জিজ্ঞেস করে, কী হয়েছে? উনি বললেন, আমি জানি না। আমাকে গাড়িতে করে এখানে চোখ বাঁধা অবস্থায় এনে ফেলে গেছে। পুলিশ বলল, আপনি কোথা থেকে আসছেন? উনি বললেন, আমাকে তো দুই মাস ধরে আটক করে রেখেছিল, বন্দী করে রেখেছিল। আমাকে কে বা কারা বন্দী করেছিল, আমি জানি না। আমি বন্দী অবস্থায় ছিলাম, আমাকে গাড়িতে করে চোখ বেঁধে এখানে নিয়ে এসে ফেলে গেছে। এটুকুই উনি বক্তব্য রেখেছেন।’
আজ মঙ্গলবার ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের দ্য নর্থইস্ট টুডে পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে হাসপাতালে পুলিশের সঙ্গে দাঁড়ানো অবস্থায় সালাহ উদ্দিন আহমেদের একটি ছবিও দেখানো হয়েছে।
ছবিতে দেখা যায়, সাদা পোশাক পরিহিত সালাহ উদ্দিনের গায়ে জড়ানো রয়েছে একটি খয়েরি-সাদা চেক চাদর। তাঁর হাত ধরে রেখেছেন একজন পুলিশ সদস্য। পেছনে দেখা যায় হাসপাতালের একজন নার্সকে।
গত ১০ মার্চ থেকে ‘নিখোঁজ ছিলেন’ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তাঁর পরিবার ও দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে।
তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করা হয়নি বলে দাবি করেছিল র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান চেয়ে গত ১১ মার্চ রাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গুলশান ও উত্তরা পশ্চিম থানায় যান তাঁর স্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। তবে কোনো থানাই তাঁর জিডি গ্রহণ করেনি। পরে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি দেন তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ।
গত ১২ মার্চ হাসিনা আহমেদের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে কেন খুঁজে বের করা হবে না এবং রোববার তাঁকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত ২০ এপ্রিল হাইকোর্ট আগামী ছয় মাস সালাহ উদ্দিন আহমেদের খোঁজ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেন।