বরগুনায় ইমামের বিরুদ্ধে হজ-প্রতারণার মামলা
বরগুনার কেন্দ্রীয় (সদরঘাট) জামে মসজিদের পেশ ইমাম মো. জাহিদুল ইসলামের (৪৫) বিরুদ্ধে পবিত্র হজের নামে প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
শহরের কেজি স্কুল সড়কের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী ভুক্তভোগী রিফাত আরা মুকুল আজ বৃহস্পতিবার সকালে জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো.মাইনুল হকের কাছে এ মামলা করেন। আদালত বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণীতে ভুক্তভোগী রিফাত আরা মুকুল উল্লেখ করেন, স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে পবিত্র হজে যাবেন বলে তাঁরা লামরাস এভিয়েশন নামের একটি ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। ওই ট্রাভেল এজেন্সির চাহিদ অনুযায়ী টাকা ও সব কাগজপত্র সময় মতো পরিশোধ করেন তারা। কিন্তু ট্রাভেল এজেন্সি লামারাস এভিয়েশন ও তার কমিশনপ্রাপ্ত দালাল বরগুনার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের বিতর্কিত পেশ ইমাম মো. জাহিদুল ইসলাম তাঁদের বাণিজ্যিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে প্রতারণার মাধ্যমে চলতি বছর তাঁর বৃদ্ধ স্বামী মো. আনোয়ার হোসেন মাস্টারকে গাইড ভিসায় পৃথক দলে হজে পাঠান।
অন্যদিকে, স্ত্রী রিফাত আরা মুকুলের ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাঁর মাহরাম (বৈধ অভিভাবক) সেজে হজে যান ইমাম জাহিদুল।
মামলার বিবরণীতে বাদী রিফাত আরা মুকুল আরো উল্লেখ করেন, ইমাম জাহিদুলের এ প্রতারণার কারণে তাঁকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। তাঁর বাম হাত অনেকটাই অচল। নিজের কাপড় নিজে পরতে কষ্ট হয় তাঁর। এমন পরিস্থিতিতে আকস্মিকভাবে স্বামী ছাড়া অজানা-অচেনা পথে একা ফ্লাইটে হজে যাওয়া এবং হাজারো মানুষের ভিড়ে ওমরাহ হজ পালন করা ছিল চরম ভোগান্তির বিষয়। এ ছাড়া ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী ইমাম জাহিদুল যেহেতু তাঁর বৈধ মাহরাম নন সেহেতু জাহিদুলের এ প্রতারণার কারণে তাঁর হজের বৈধতা নিয়েও তিনি শঙ্কিত।
এর আগে গত রোববার ঈমাম মো. জাহিদুল ইসলামের (৪৫) বিরুদ্ধে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে বরগুনা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন বরগুনা শহরের নজরুল ইসলাম সড়কের বাসিন্দা মো. মনিরুল ইসলাম (৪৮)।
সাধারণ ডায়েরিতে মনিরুল ইসলাম উল্লেখ করেন,একটি ট্রাভেল এজেন্সির পক্ষে বাণিজ্যিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে হজ পালনের নামে স্থানীয় এক দম্পতির সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ থাকায় ইমাম জাহিদুল ইসলামকে মসজিদের ইমামের পদ থেকে অপসারণের জন্য তিনি কেন্দ্রীয় (সদরঘাট) মসজিদের সভাপতি ও বরগুনার জেলা প্রাশাসকের কাছে আবেদন করেন। জাহিদুল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে সহযোগী আলহাজ আবুল হোসেন জমাদ্দার (৭০), আমজাদ হোসেন (৫০), সাবু (৪৬), জসিম উদ্দীনকে (৪৫) সঙ্গে নিয়ে গত রোববার রাতে বরগুনা সোনাখালী এলাকার মারকাস মসজিদে উপস্থিত হয়ে তাঁকে হত্যার হুমকি দেন।
বরগুনার কেন্দ্রীয় (সদরঘাট) জামে মসজিদের ইমাম জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে হ্জ পালনের নামে লাখ টাকা বাণিজ্যের পাশাপাশি মসজিদের অর্থ আত্মসাৎ,প্রতারণা এবং জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। এরইমধ্যে তাঁর এসব অনিয়ম দুর্নীতি ও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে তাঁর পিছনে নামাজ পড়া থেকে বিরত রয়েছেন অনেক মুসুল্লি।