এক মাসেই ৩২৬ কোটি টাকা ভূমিকর আদায় : ভূমিমন্ত্রী

অনলাইন ব্যবস্থা চালুর এক মাসেই ৩২৬ কোট টাকা ভূমিকর আদায় করা সম্ভব হয়েছে। এমন তথ্য জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।
আজ বুধবার (২৪ মে) রাজধানী গুলশানের এক অভিজাত হোটেলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে সম্পত্তি কর ব্যবস্থার পরিধি ও অবস্থা’ বিষয়ক এক নীতি সংলাপে মন্ত্রী এই আশা প্রকাশ করেন। বেসরকারি নীতি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) সংলাপের আয়োজন করে।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, দুই বছর আগে যখন অনলাইনের আওতায় ভূমিকর আদায়ের ব্যবস্থা ছিল না, তখন পুরো বছরে ভূমিকর আদায় হতো ৬২১ কোটি টাকা, যার অর্ধেকটাই এখন আদায় হয়ে যাচ্ছে একমাসে।
আগামী বছর ভূমি উন্নয়ন কর আদায় তিনগুণ বাড়বে এমন আশা প্রকাশ করেছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আগামী বছর থেকে প্রায় ভূমি উন্নয়ন কর বাবদ দুই হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হিসেবে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া সম্ভব হবে। এই অর্থের পরিমাণ ডিজিটাল ভূমি উন্নয়ন কর সিস্টেম স্থাপনের পূর্বে ভূমি কর বাবদ আদায়কৃত অর্থের প্রায় তিন গুণ।’
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘গত এপ্রিলের ১৪ তারিখ থেকে ভূমিকর সম্পূর্ণভাবে অনলাইন মাধ্যমে আদায় শুরু হয়েছে। এরপর মাত্র এক মাসে কর আদায় হয়েছে ৩২৬ কোটি টাকা। অথচ, আগে পুরো অর্থবছরে ৮০০ কোটি টাকার কাছাকাছি ভূমিকর আদায় হতো। অনলাইনে ভূমিকর আদায়ের ব্যবস্থা চালু করার কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ভূমিকর ব্যবস্থাকে আধুনিক করে গড়ে তোলার জন্য ভূমি উন্নয়ন কর আইনের খসড়া ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভায় নীতিগতভাবে অনুমোদন পেয়েছে। খুব দ্রুত এই খসড়া জাতীয় সংসদে আইন প্রণয়নের জন্য পাঠানো হবে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কথা মাথায় রেখে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের বর্ষ দেশে প্রচলিত অর্থবছরে (জুন-জুলাই) করার প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়া আইনে।’
দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কথা মাথায় রেখেই ভূমি করের হার নির্ধারণ করা হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে কর জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) অনুপাত বাড়ানোর জন্য ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্সসহ অন্যান্য ডিরেক্ট ট্যাক্স বাড়াতে হবে। এ ব্যাপারে সরকার কাজ করছে। ভ্যাট দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে বলে মন্ত্রী এসময় মতপ্রকাশ করেন।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন সংলাপ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে সিপিডি ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ‘বাংলাদেশে সম্পত্তি কর ব্যবস্থার পরিধি ও অবস্থা’ শীর্ষক গবেষণা সমীক্ষা বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের হেড অব কো-অপারেশন মোরিজিও সিয়ান, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ, পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান হাবিব মনসুর, স্নেহাশিস মাহমুদ অ্যান্ড কোম্পানির পার্টনার স্নেহাশিস বড়ুয়া প্রমুখ।