মানবতাবিরোধী অপরাধ : যশোরে চার জনের রায় ২৫ জুন
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলায় যশোরের বাঘারপাড়ার মো. আমজাদ হোসেন মোল্লাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে আগামী ২৫ জুন রায় ঘোষণা করবেন ট্রাইব্যুনাল। আজ বুধবার (২১ জুন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার ব্যারিস্টার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, মো. সাহিদুর রহমান ও রেজিয়া সুলতানা চমন। অপরদিকে, আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।
গত ১১ মে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে যশোরের বাঘারপাড়ার মো. আমজাদ হোসেন মোল্লাসহ চার আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। আসামিরা হলেন— মো. আমজাদ হোসেন মোল্লা, মো. ওহাব মোল্লা, মো. মাহতাব বিশ্বাস, মো. ফসিয়ার রহমান মোল্লা ও মো. নওশের বিশ্বাস। এর মধ্যে অন্য মামলায় গ্রেপ্তার থাকা আমজাদ হোসেন মোল্লাকে ২০১৭ সালের ২২ মে এ মামলায় শ্যন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। বাকি চারজন ছিলেন পলাতক। পলাতকদের মধ্যে নওশের বিশ্বাস নামের আসামি মারা গেছেন।
প্রসিকিউশন থেকে জানানো হয়েছে, মামলায় চার আসামির মধ্যে আমজাদ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। বাকি তিনজন পলাতক। এর আগে মামলায় মোট আসামি ছিলেন পাঁচজন। ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল এ মামলার তদন্ত শুরু হয়। ২০১৮ সালের ১৬ এপ্রিল তা শেষ হয়। যশোর জেলা প্রশাসকের দেওয়া রাজাকারদের তালিকাতেও আসামিদের নাম রয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ
অভিযোগ-১, ১৯৭১ সালের ৩ ভাদ্র বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বাঘারপাড়া থানার উত্তর চাঁদপুর গ্রামের মো. ময়েনউদ্দিন ওরফে ময়নাকে তার বাড়ি থেকে আটক করে প্রেমচারা রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায় মো. আমজাদ হোসেন মোল্লা ও তার সহযোগীরা। সেখানে তিন দিন আটকে রেখে নির্যাতন করে ৬ ভাদ্র দুপুর ১২টার দিকে খুড়দা গ্রামের বিজয় দাশের দেবদারু বাগানে কুয়ার পাশে দাঁড় করিয়ে ময়নাকে গুলি করে হত্যা করে মো. আমজাদ হোসেন মোল্লা।
অভিযোগ-২, ১৯৭১ সালের ২০ জুলাই দুপুর ১টার দিকে আমজাদ হোসেন মোল্লা ও তার সহযোগীরা বাঘারপাড়ার খাজুরা বাজার থেকে ডা. নওফেল উদ্দিন বিশ্বাসকে আটক করে প্রেমচারা রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরদিন দুপুর ১২টায় তাকে থানা সদরের মহিরাম গ্রামের মাঠে গুলি করে হত্যা করা হয়।
অভিযোগ-৩, আমজাদ হোসেন মোল্লা ও তার সহযোগীরা ১৯৭১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সকাল ৮-৯ টার দিকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তাকারী সুরত আলী বিশ্বাস ও মোক্তার বিশ্বাসকে তাদের বাড়ি থেকে ধরে প্রেমচারা রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে তিন দিন নির্যাতনের পর ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার দিকে খুড়দা গ্রামের বিজয় দাশের দেবদারু বাগানের কুয়ার পাশে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যার পর লাশ কুয়ায় ফেলে দেয়।