বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল আগামী বছর চালু : বেবিচক চেয়ারম্যান
আগামী অক্টোবর মাসে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনালের সফট ওপেনিং করার জন্য প্রকল্প এলাকায় দিন-রাত কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আজ মঙ্গলবার (২৭ জুন) দুপুরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজের অগ্রগতি বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বেবিচক চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনালে সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করা হয়েছিল।
এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি আমরা। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সব থেকে দ্রুততম সময়ে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তৃতীয় টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধনের (সফট ওপেনিং) জন্য প্রকল্প এলাকায় দিন রাত কাজ চলছে। আপনারা জানেন আজ থেকে ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে, কিন্তু আমাদের এখানে ৩-৪ হাজার শ্রমিকরা ছুটিতেও কাজ করে যাবেন। তারা শুধু ঈদের দিন কাজ করবে না, এর পরের দিন থেকে তারা আবার কাজ শুরু করবেন।
বেবিচক চেয়ারম্যান আরও বলেন, আশা করছি সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে সফট উদ্বোধন করা হবে। আমরা অক্টোবরের আগে প্রকল্পের ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করতে চাই। আশা করি সময়ের আগে কাজ শেষ হবে। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ৭৭ দশমিক ৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অক্টোবর মাসে সফট উদ্বোধন হলেও এই টার্মিনাল পুরোপুরি ফাংশনাল হবে ২০২৪ সালে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করছে স্যামসাং গ্রুপের কনস্ট্রাকশন ইউনিট স্যামসাং কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ট্রেডিং (সিঅ্যান্ডটি) করপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটির নির্মিত স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে বুর্জ খলিফা, পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার, তাইপে ১০১, সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের ৪ নম্বর টার্মিনাল, দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচেওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও আবুধাবির ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তি ও সম্ভাবনা উন্মোচনের মাধ্যমে নির্মাণে আধুনিকতা নিয়ে এসেছে স্যামসাং সিঅ্যান্ডটির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন গ্রুপ।
এছাড়াও টার্মিনালের ভেতরের ভবনটির নকশা তৈরি করেছেন বিখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিন। তিনি সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্টের টার্মিনাল-৩, চীনের গুয়াঞ্জুর এটিসি টাওয়ার ভবন, ভারতের আহমেদাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ইসলামাবাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের নকশা তৈরি করেন।
২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। বৃহৎ এই থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পটির ব্যয় প্রথমে ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে অবশ্য প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের এ টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি প্লেন রাখার অ্যাপ্রোন (প্লেন পার্ক করার জায়গা) করা হয়েছে। তবে এ টার্মিনালের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন হবে মডার্ন টার্মিনাল বিল্ডিং। দুই লাখ ৩০ হাজার স্কয়ার মিটারের বিল্ডিংয়ের ভেতরে থাকবে পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য ও অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির ছোঁয়া।