সেন্ট্রাল হাসপাতালের ঘটনায় ডা. শাহজাদীর জামিন মেলেনি
রাজধানীর গ্রিন রোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল হাসপাতালে ‘ভুল চিকিৎসায়’ মা ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় চিকিৎসক শাহজাদীর জামিন নাকচ করেছেন আদালত।
আজ বুধবার (১২ জুলাই) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আসাদুজ্জামান এই আদেশ দেন।
নথি থেকে জানা গেছে, গত ১৪ জুন সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও কর্তৃপক্ষের প্রতারণায় মাহবুবা রহমান আঁখি নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার স্বামী ইয়াকুব আলী। তিনি দাবি করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় মারা গেছেন তাদের নবজাতক সন্তানও।
গত ১৪ জুন ধানমন্ডি থানায় মোট ছয় জনের নাম উল্লেখসহ পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ অভিযোগ এনে মামলা করেন ইয়াকুব আলী। এরপরই ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনাকে গ্রেপ্তার করে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। মামলার অন্য আসামিরা হলেন— ডা. মিলি, সেন্ট্রাল হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজ, জমির ও এহসান।
মামলার পরে গত ১৫ জুন আসামি ডা. শাহজাদী ও ডা. মুনাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর আসামিরা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হলে তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারহা দিবা ছন্দা আসামি মুনার ও ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আফনান সুমি আসামি শাহজাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাদের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
গত তিন মাস ধরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মাহবুবা রহমান আঁখি। এমনকি তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক ছিল বলেও চিকিৎসক জানিয়েছিলেন। নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব সম্ভব হবে বলে আশ্বস্ত করেছিলেন ডা. সংযুক্তা সাহা। প্রসব ব্যথা ওঠায় গত ৯ জুন রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডা. সংযুক্তার অধীনে মাহবুবাকে ভর্তি করা হয়। তখন ডা. সংযুক্তা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সংযুক্তা সাহা আছেন এবং ওটিতে (অপারেশন থিয়েটার) কাজ করছেন। এরপর অন্য চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা ব্যর্থ হলে অস্ত্রোপচার করে বাচ্চা বের করা হয়। কিন্তু পরদিন ১০ জুন মারা যায় শিশুটি। আর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ জুন দুপুরে মারা যান মাহবুবুর রহমান আঁখি।