বাংলাদেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহী ওয়াশিংটন : কংগ্রেসম্যান জো উইলসন
মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের কো-চেয়ার কংগ্রেসম্যান জো উইলসন বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সম্পর্ক সম্প্রসারণ এবং উভয় দেশের জনগণের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে আগ্রহী।
দক্ষিণ ক্যারোলিনা থেকে নির্বাচিত কংগ্রেসম্যান জো উইলসন স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্ব উদযাপন উপলক্ষে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্যুরো অব সাউথ অ্যান্ড সেন্ট্রাল এশিয়ার প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি এলিজাবেথ হর্স্ট ও হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের ডিরেক্টর ফর সাউথ এশিয়া রিজিওনাল অ্যাফেয়ার্স ব্রায়ান লুটি ও প্রাক্তন কংগ্রেস সদস্য জিম মরানও এতে বক্তব্য দেন।
কংগ্রেসম্যান জো উইলসন বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের পারস্পরিক সুবিধার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাসোসিয়েশনের এটি একটি বড় সুযোগ। বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করতে গিয়ে জো উইলসন ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যাওয়া এবং দারিদ্র্য বিমোচনে সাফল্য অর্জনের কথা উল্লেখ করেন।
জো উইলসন বলেন, ‘বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং এর জনগণ কঠোর পরিশ্রমী।’ তিনি রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করে এই সপ্তাহে প্রতিনিধি পরিষদে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথিদের স্বাগত জানান। বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কে উৎসাহব্যঞ্জক বক্তব্যের জন্য কংগ্রেসম্যান জো উইলসনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভাবনীয় আর্থ-সামাজিক রূপান্তরের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ইমরান বলেন, ‘সরকার সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে।’
রাষ্ট্রদূত ইমরান বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থন এবং মানবিক সহায়তার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এলিজাবেথ হর্স্ট তার বক্তব্যে বলেন, ‘বিগত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি শক্তিশালী ও বিস্তৃত অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছে। এই অংশীদারিত্ব একটি সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য আমাদের যৌথ দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।’
ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলবিষয়ক পরিচালক ব্রায়ান লুটি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারো সঙ্গে বিদ্বেষ নয়’ পররাষ্ট্রনীতিকে স্বীকৃতি দেয়, সম্মান ও সমর্থন করে।
ব্রায়ান লুটি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র একইসঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের পাশাপাশি জাতিসংঘের সনদে উল্লিখিত আন্তর্জাতিক আইন ও নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’
বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ড. আহমদ কায়কাউস, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও সুদানের রাষ্ট্রদূত ছাড়াও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, মার্কিন সরকার ও পররাষ্ট্র দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের সদস্যরা এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি হস্তশিল্প প্রদর্শন করা হয় এবং অতিথিদের জন্য ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার পরিবেশন করা হয়।