কক্সবাজারের পাহাড়ে আবাসন বরাদ্দে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা
কক্সবাজারের ঝিলনজা মৌজার পাহাড়ি ভূমিতে আবাসনের জন্য বরাদ্দ দেওয়ার সব কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হাইকোর্ট। ঝিলনজা মৌজার বিএস ১৭০৭০ নম্বর দাগে অবস্থিত ৪৯ দশমিক ৯৭ একর পাহাড় শ্রেণির জমির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কিত প্রতিবেদন তৈরি করে আদালতে জমা দিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলার পরিচালক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং পুলিশ সুপারকে (এসপি) নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে পুনরায় পাহাড় কাটা ও পাহাড়ের ক্ষতিসাধন বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার (২৩ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী এবং বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে, জনস্বার্থে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বিষয়টি নিয়ে রিট করে। যার প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারক এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ বেলার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মিনহাজুল হক চৌধুরী। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না।
আইনজীবীরা জানান, পাহাড়ে আবাসনের জন্য ভূমি বরাদ্দের সব কার্যক্রমের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশের পাশাপাশি মহামান্য আদালত বিবাদীদের ওপর রুলও জারি করেন।
জারি করা রুলে আদালত কক্সবাজার ঝিলনজা মৌজার ওই পাহাড় রক্ষার ব্যর্থতা সংবিধান ও দেশে প্রচলিত আইন ও পাহাড় রক্ষায় আদালতের প্রদত্ত রায়ের পরিপন্থি হওয়ায় কেন তা আইন বহির্ভূত, আইনি কর্তৃত্ববিহীন এবং আইনগতভাবে ভিত্তিহীন ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত। এমনকি, কেন অবশিষ্ট পাহাড় রক্ষার নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক, বিভাগীয় কমিশনার চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি), কক্সবাজারে পুলিশ সুপার (এসপি) ও কক্সবাজার জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালককে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
কক্সবাজার নগরীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে ও পরিবেশগত বিপর্যয় থেকে নগরীকে রক্ষা করতে এ জেলার ১০ হাজার ৪৬৫ হেক্টর এলাকাকে সরকার ১৯৯৯ সালে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করেছে। সেখানে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সরকার ঘোষিত সংকটাপন্ন এলাকার অন্যান্য মৌজার মধ্যে রয়েছে ঝিলনজা মৌজা। এই মৌজার ৪৯ দশমিক ৯৭ একর পাহাড় শ্রেণির জমি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক (ডিসি), কক্সবাজার এর পক্ষে রেকর্ড রয়েছে।
আইনি বিধিনিষেধ ও আদালতের ষ্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও কক্সবাজার জেলার ঝিলনজা মৌজার বিএস ১৭০৭০ নং দাগে নতুন করে পাহাড় কাটতে শুরু করায় বেলা গত ১৩ জুলাই এসব পাহাড় কাটা বন্ধের দাবিতে রিট করে।