সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের নিহত ৩
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/08/06/faridpur-death-news-mobarak.jpg)
সৌদি আরবের দাম্মামে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের এক পরিবারের বাবা, ছেলে ও মেয়েসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়ে স্ত্রী ও বড় মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি। গতকাল শনিবার (৫ আগস্ট) সৌদি আরব সময় সকাল ১০টার দিকে আল-কাসিম নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নিহত মোবারক হোসেনের ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ চরকমলাপুরের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তাঁর বৃদ্ধা মা অসুস্থ আলেয়া বেগম এ খবর জানার পর থেকেই বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন মোবারক হোসেন (৪৮), তাঁর দশম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে তানজিল আব্দুল্লাহ (১৭) ও অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে মাহিয়া মাহি (১৪)। এ ঘটনায় আহতরা হলেন- মোবারক হোসেনের স্ত্রী শিখা আক্তার (৪০) ও বড় মেয়ে মিথিলা ফারজানা মিম (১৯)। তাঁরা দাম্মামে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) মোবারক হোসেন পরিবারের সবাইকে নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ওমরাহ পালনের জন্য মক্কার উদ্দেশে রওনা হন। ওমরাহ্ পালন শেষেগতকাল সৌদি আরব সকালে তারা দাম্মাম শহরের নিজ বাসায় ফিরছিলেন। পথে আল-কাসিম নামক স্থানে পৌঁছালে পেছন থেকে একটি গাড়ি তাদের গাড়িকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে তাঁদের গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং গাড়িতে থাকা পাঁচজন গুরুতর আহত হন। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি দুজন আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিহত সৌদি প্রবাসী মোবারক হোসেন ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার হাজীগঞ্জের গাজিরটেক গ্রামের শেখ মোহাম্মদ আলী ওরফে মোহন শেখের বড় ছেলে। তারা পাঁচ ভাই আর তিন বোনের মধ্যে চার ভাই সৌদি প্রবাসী।
মোবারক হোসেন প্রায় দুই যুগ ধরে পরিবার নিয়ে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে বসবাস করে আসছিলেন। সেখানে তাঁর একটি গাড়ি মেরামতের দোকান রয়েছে। প্রায় ৩০ বছর সৌদি আরবে বসবাস তাঁদের। গত চার মাস আগেও পরিবার নিয়ে দেশে বেড়াতে এসেছিলেন তারা।
দুর্ঘটনার পর তাদের মৃত্যুর খবর পেয়ে এ দেশে অবস্থানকরা তাদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এরপর থেকেই ওই পরিবারে চলছে শোকের মাতম। তাদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে আশপাশের পরিবেশ। বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নদীভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে চরভদ্রাসনের গ্রামের বাড়ি ছেড়ে এখন বসবাস করছেন ফরিদপুর শহরের চর কমলাপুরে।
নিহত মোবারকের বাবা শেখ মোহম্মদ আলী ওরফে মোহন শেখ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘বড় নাতনি মিমের কানাডা যাওয়ার সব প্রস্তুতি শেষ করেছিল। তার আগে তারা পরিবার নিয়ে ওমরাহ করতে যায়। আমার ছেলে আর দুই নাতির জীবন শেষ হয়ে গেছে এই দুর্ঘটনায়। আমি আর কি বলব।’
ফোরম্যানের চাকরি নিয়ে মোবারক হোসেন সৌদি আরবে যান। পরে সেখানে গাড়ির গ্যারেজ খুলেন।
নিহত মোবারকের ছোট ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বুধবার রাতে তাঁর বড় ভাই মোবারক হোসেন তাঁদের ফোন করে জানান যে, তাঁরা পরের দিন ওমরাহ করতে যাবেন। এটিই ছিল তাদের সঙ্গে শেষ কথা। এরপর দুর্ঘটনার দুই ঘণ্টা পর তারা জানতে পারেন গাড়ি অ্যাক্সিডেন্ট করেছে।