চট্টগ্রামের দুই উপজেলায় চার লাখ মানুষ পানিবন্দি
দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। উপজেলার সড়ক-মহাসড়ক সবকিছু এখন পানির নিচে। বন্যা কবলিত হয়ে পানিবন্দি অন্তত চার লাখ মানুষ। ঘরে-উঠানে পানি প্রবেশ করায় বসতঘর ছেড়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের উঁচু স্থান ও নবনির্মিতব্য দোহাজারী কক্সবাজার রেল লাইনের ওপরে অবস্থান নিয়েছে অনেকে। আবার অনেকেই আছেন নিজ ঘরে পানিবন্দি।
আজ মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) ভোরে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, সাতকানিয়া উপজেলার কেরানিহাট এলাকা, হাসমত আলী শিকদারের দোকান ও লোহাগাড়ার বারো আউলিয়া ডিগ্রি কলেজের সামনে দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। এ সময় সড়কের উভয় পাশে শত শত যানবাহন আটকে যায়। পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
কেরানিহাট এলাকায় অবস্থান করা কেওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান আলী বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের প্রায় শতভাগ মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছে। সবার ঘরে উঠেছে বন্যার পানি। অনেক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘সব ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা বন্যা কবলিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যাকবলিত মানুষকে সেখানে আশ্রায় নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পানিবন্দি মানুষ উদ্ধার এবং তাদের কাছে শুকনো খাবার পাঠানোর কাজ চলছে।’
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ উদ্দিন বলেন, ‘লোহাগাড়ার ইতিহাসের সর্ববৃহৎ এই বন্যায় জান-মালের ক্ষতি এড়ানোর জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জনপ্রতিনিধিরা মাঠে রয়েছে।’
গত শুক্রবার (৪ আগস্ট) থেকে টানা বর্ষণের ফলে সাতকানিয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে থাকে। পর্যায়ক্রমে বাড়তে থাকে বন্যা কবলিত মানুষের সংখ্যা। সর্বশেষ গতকাল সোমবার সকাল থেকে ভারী বর্ষণে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শঙ্খ নদী, ডলু নদী ও হাঙ্গর খালের বাঁধ ভেঙে সাতকানিয়া পৌর সদরের উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা কার্যালয়, সাতকানিয়া থানা, সাতকানিয়া উপজেলা ভূমি কার্যালয়, ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়, সাতকানিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতসহ গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলোতে বন্যার পানি প্রবেশ করে। পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় যোগাযোগ ব্যবস্থা। চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়কের দস্তিদারহাট এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় পার্বত্য জেলা বান্দরবানের সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।