অনুমতি ছাড়াই ইউপি চেয়ারম্যানের বিদেশ ভ্রমণের অভিযোগ
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুলাল তালুকদার সরকারি বিধি মোতাবেক ছুটি না নিয়ে ভারত ভ্রমণে রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে এ ঘটনায় স্থানীয় সরকার বিভাগ ও জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য দিলীপ বিশ্বাস।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) লিখিত অভিযোগ সূত্র জানা গেছে, জনপ্রতিনিধিদের দেশের বাইরে বহির্গমন করতে হলে তাকে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। অথচ এই নির্দেশনা অমান্য করে গত ১৮ আগস্ট বাংলাদেশ থেকে ভারতে যান ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল তালুকদার। এসময় ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরাও ছিলেন।
অভিযোগে নবগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য দিলীপ বিশ্বাস বলেন, ‘চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই দুলাল তালুকদার তার দায়িত্বের অবহেলা করে যাচ্ছেন। অনিয়ম করে পরিষদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছেন। হঠাৎ করে দেশ ত্যাগ করে ভারতে চলে যাওয়ার ফলে ইউনিয়নের জনসাধারণ নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এলাকার বিভিন্ন লোকজন ইউপি পরিষদে জন্মনিবন্ধন ও চেয়ায়ম্যান সনদ নিতে এসে তাকে না পেয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তিনি এর আগেও এভাবেই সরকারি অনুমতি ছাড়াই বহির্গমন করেছিলেন।’
নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বিধান সরকার বলেন, ‘চেয়ারম্যান অসুস্থতার কারণে তার পরিবার নিয়ে ভারতে গেছেন। সরকারি অনুমতি না নিয়ে বিদেশে গেছে কি—না জানি না। তবে, ইউএনওকে মৌখিকভাবে অবশ্যই বলে গেছেন। তার অনুপস্থিতিতে দৈনন্দিন কাজে কিছুটা জটিলতা হলেও তিনি চলে এলে এগুলো আবার ঠিক হয়ে যাবে।’
এ সম্পর্কে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল তালুকদারের ছেলে দিগন্ত তালুকদার বলেন, ‘বাবা নিয়ম মেনে ছুটির আবেদন করেই ভারতে গেছেন। এখানে সরকারি নিয়মের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।’
ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ আফরোজ বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান আমাদের কাছে ছুটির আবেদন করলেও অনুমতি দেওয়ার এখতিয়ার আমাদের নেই। আমরা তার কাগজপত্র স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে পুলিশ তদন্ত শেষে তার ছুটি মঞ্জুর হবে। পরে তিনি দেশ ত্যাগ করতে পারবেন। যদি তিনি এই নিয়ম না মেনে ভারত গিয়ে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মাদারীপুর স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যানের ছুটির আবেদন আমরা পুলিশ তদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। তদন্ত চলাকালীন কোনোভাবেই তার দেশ ত্যাগের সুযোগ নেই। একজন সেবাপ্রত্যাশী আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।’