নানির মরদেহ নিতে গিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল নাতির
নানির মরদেহ নিয়ে বাড়ি হলো না নাতির। আজ শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল তাঁরও।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান বৃদ্ধা নানি। তাঁর মরদেহ ফ্রিজিং গাড়িতে করে দিনাজপুরে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন মেয়ের ঘরের নাতি হৃদয় মাহিন আলভি (২৩)। গাড়ির সামনে চালকের পাশে বসে ছিলেন তিনি। আজ সকাল সাড়ে ৭টায় ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার নুরজাহানপুরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাককে ধাক্কা দেয় লাশবাহী গাড়িটি। এতে লাশবাহী গাড়ির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস এসে গাড়িতে থাকা দুজনকে উদ্ধার করে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করলে চিকিৎসক আলভিকে মৃত ঘোষণা করেন।
আলভি দিনাজপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ বালুবাড়ি এলাকার মেফতাহুর রহমানের ছেলে। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন লাশবাহী গাড়িটির চালক মিঠুন মিয়াও (৩৫)। তিনি ঢাকার ওই হাসপাতালের গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ঘোড়াঘাট ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ নিরঞ্জন সরকার বলেন, মহাসড়কের পাশে দিনাজপুরমুখী ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। আমরা ৭টা ৪৫ মিনিটে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। লাশবাহী গাড়িতে একজন বয়োজ্যেষ্ঠ নারীর মরদেহ ছিল।
নিহত আলভির মামা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (প্রশাসন) শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমার মা চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান। আমার মায়ের মরদেহ গাড়িতে করে দিনাজপুর নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। লাশবাহী গাড়িতে আমার ভাগনে ছিল। সড়ক দুর্ঘটনায় সে-ও মারা গেল। দুটি মৃত্যুশোকে আমার পরিবার দিশেহারা।’
ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মনিরুজ্জামান মুরাদ বলেন, ‘দুর্ঘটনায় পতিত লাশবাহী গাড়িটির চালক আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁর একটি হাত ভেঙে গেছে।’
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, দুর্ঘটনার পর পরই দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকটি পালিয়ে গেছে। মৃত বৃদ্ধা ও নিহত যুবকের মরদেহ তাঁদের পরিবার দিনাজপুরে নিয়ে গেছে। তাঁদের পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।