শীর্ষ ছয় কোম্পানির স্বার্থে বাড়ছে ওষুধের দাম, দাবি ডা. রফিকুলের
বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, গভীর উদ্বেগের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে যখন দেশের জনগণ দিশেহারা, তখন ওষুধের দাম বৃদ্ধি করে দেশের জনগণকে এক নির্মম পরিস্থিতে নিয়ে যাচ্ছে এই সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের তথ্যমতে, চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৪ শতাংশ ওষুধের পেছনে খরচ হয়, সেই ওষুধের দাম বৃদ্ধি করে যেনো নির্মম এক প্রহসনের আয়োজন করল সরকার। তার দাবি, শীর্ষ ছয় কোম্পানির মালিকানা দেখলেই বোঝা যায় কার স্বার্থে দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এক বিবৃতিতে ডা. রফিকুল এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘২০২২ সালে কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়া শুধুমাত্র ওষুধ কোম্পানিগুলোর সুপারিশে ২০টি জেনেরিকের ৫৩টি ওষুধের দাম বৃদ্ধি করে ওষুধ প্রশাসন, যা ছিলো নজিরবিহীন। সেই সময় প্যারাসিটামল, হৃদরোগ, ব্যাথানাশক ও গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের দাম ৫০ থেকে ১৩৪ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।’
ডা. রফিকুল বলেন, ‘ওষুধের দাম বৃদ্ধির এই রেশ কাটতে না কাটতেই অতি সম্প্রতি দেশের শীর্ষ ছয় প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত ২৩৪টি জীবন রক্ষাকারী ওষুধের দাম ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। যার সুবিধা নিচ্ছে অসাধু কিছু ব্যবসায়ী। যার ফলে ওষুধের মূল্য প্রকৃত মূল্যের তুলনায় অনেক বেশি খরচ দিয়ে কিনতে হিমশিম খাচ্ছে জনগণ।’
বিবৃতিতে বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক আরও বলেন, ‘মারাত্মক ডেঙ্গুর প্রকোপের সময় ওষুুধের এই লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি চরম বিপর্যয় নিয়ে আসছে। একই সঙ্গে জীবনরক্ষাকারী স্যালাইনের মূল্যবৃদ্ধি অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। একইসঙ্গে স্যালাইনের সংকট নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ওষুধ প্রশাসন এসব ক্ষেত্রে নীরব। শীর্ষ ছয় কোম্পানির মালিকানা দেখলেই বোঝা যাবে, কার স্বার্থ রক্ষার্থে এই দাম বৃদ্ধি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে হুট করে দামবৃদ্ধির কারণে অনেকেই মাঝপথে ওষুধ সেবন বন্ধ করে দিচ্ছে ফলে নানা রকম স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
“১৯৮২ সালের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১১(১) ধারা অনুযায়ী স্পষ্ট বলা আছে ‘সরকার অফিসিয়াল গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে ওষুুধের দাম নির্ধারন করতে পারবে।’ অথচ এই নিয়মের তোয়াক্কা না করে ২০২২ সালেই ওষুুধ প্রশাসন দাম বাড়িয়েছে দুবার” উল্লেখ করে ডা. রফিকুল বলেন, ‘এভাবে দেশের প্রতিটি খাত ধ্বংসের সম্মুখীন। চিকিৎসা মৌলিক অধিকার তাও আজ ক্ষুন্ন হচ্ছে। নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত এই সরকার কোনোভাবেই দেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা না করে এক চরম দুর্যোগের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না। অবিলম্বে স্বাস্থ্যখাতে এই বেহাল দশার সঙ্গে জড়িত সরকারের কুশীলবদের জবাবদিহিতার মুখোমুখি করতে হবে।’