ঘূর্ণিঝড় হামুনে সারা দেশে বন্ধ নৌযান চলাচল
উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুন। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে উত্তাল রয়েছে সমুদ্র ও নদ-নদী। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে। হামুনের কারণে সারা দেশে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। আজ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) এ নির্দেশ দেয় বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ ১২ নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুন। পূর্ব-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
ঘূর্ণিঝড়টি আরও পূর্ব-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আজ রাত নাগাদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে।
বিপদ এড়াতে সমুদ্র ও নদী বন্দরগুলোতে আলাদা আলাদাভাবে দেখাতে বলা হয়েছে সংকেত। সর্বোচ্চ সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে। আর মোংলা সমুদ্রবন্দরকে দেখাতে বলা হয়েছে পাঁচ নম্বর বিপদ সংকেত। একইসঙ্গে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোও সাত নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১০কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি এবং তাদের অদুরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চাল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন থেকে পাঁচ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। ভারি বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ী অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমি ধস হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ হওয়া পর্যন্ত আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।