দেশজুড়ে বিএনপি ও বিরোধী জোটের তৃতীয় দফার অবরোধ শুরু
সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ কয়েকটি সমমনা দলের ডাকা তৃতীয় দফার অবরোধ শুরু হয়েছে আজ বুধবার (৮ নভেম্বর) ভোর ছয়টা থেকে।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সকাল ছয়টায় দ্বিতীয় দফার অবরোধ শেষ হওয়ার আগেই তৃতীয় দফার ঘোষণা দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ঘোষণা অনুযায়ী, আজ বুধবার সকাল ছয়টা থেকে শুক্রবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি চলবে।
প্রতিবছর ৭ নভেম্বর বিএনপি বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে পালন করে। তবে, এ বছর রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় দিবসটি উদযাপনের সব কর্মসূচি স্থগিত করে দলটি। দিবসটি উপলক্ষে এদিন কোনো ধরনের আন্দোলন কর্মসূচিও পালন করেনি বিএনপি।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ করে। তবে একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে সেই মহাসমাবেশ পণ্ড হয় এবং পরদিন ২৯ অক্টোবর হরতালের ডাক দেয় দলটি।
একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর সারা দেশে টানা তিন দিন অবরোধ কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। পৃথক ঘোষণা দিয়ে একই কর্মসূচি পালন করে জামায়াতে ইসলামী। এ ছাড়া বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে থাকা কয়েকটি দলও এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। সেই অবরোধ শেষ হওয়ার আগেই দ্বিতীয় দফায় রোববার (৫ নভেম্বর) ও সোমবার নতুন করে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক দেয় বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
মহাসমাবেশের দিন ২৮ অক্টোবর থেকে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিতে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামসহ সারা দেশের বিভিন্ন সড়কে বাস, ট্রাক, অটোরিকশায় অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুর করার খবর এসেছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় দফায় রোববার ও সোমবার সর্বাত্মক অবরোধ চলার সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ২১টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি বাস, দুটি ট্রাক, একটি প্রাইভেটকার, একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও একটি লেগুনা পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
২৮ অক্টোবর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১১০টি অগ্নিসংযোগের সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩০ অক্টোবর একটি, ৩১ অক্টোবর ১১টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর সাতটি, ৪ নভেম্বর ছয়টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি এবং ৬ নভেম্বর ১০টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এদিকে র্যাব জানিয়েছে, অবরোধের নামে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের জড়িতদের ধরতে বাহিনীটি কঠোর নজরদারি করবে। তাদের গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হবে।
বিএনপির দাবি, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এবং পরবর্তীতে নয় দিনে ১৩২টি মামলায় তাদের পাঁচ হাজার ৫৫৯ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।