জাতিসংঘে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের চিঠি, অযাচিত-অযৌক্তিক চাপের অভিযোগ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ’ বলে জাতিসংঘকে জানিয়েছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বিরোধী দল ও তাদের মিত্ররা বিক্ষোভের নামে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি পোড়ানো এবং মানুষের জীবন পোড়ানো সহ্য করবেন না বলেও জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘ মহাসচিবের কার্যালয়ের প্রধান আর্লে কোর্টনে রাট্রেকে পাঠানো এক চিঠিতে বলেন, ‘আমরা আশা করি জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জাতিসংঘের বিশ্বাসযোগ্যতা ও সম্মান সমুন্নত রাখতে নির্দলীয়তা, সততা ও বস্তুনিষ্ঠতার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখবেন।’
মোমেন লিখেছেন, যদি তাদের প্রতিবেদনগুলো মিথ্যা ও বস্তুনিষ্ঠতা ব্যতীত হয় এবং যদি সত্যভিত্তিক না হয়, তাহলে তারা তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে পারে, যা জাতিসংঘ ব্যবস্থার জন্য একটি খারাপ লক্ষণ হবে।
চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন মহল থেকে আমরা যে অযৌক্তিক, অযাচিত ও স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক চাপের সম্মুখীন হচ্ছি, তার প্রেক্ষাপটে আমরা আশা করি, জাতিসংঘের সচিবালয়, এজেন্সি ও কান্ট্রি অফিসসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন ব্যবস্থা বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অবিচল থাকতে গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করবে।’
গত ১৯ নভেম্বর চিঠিটি লেখা হয় এবং ২০ নভেম্বর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন তা প্রেরণ করে।
ইউএনবির হাতে পাওয়া চিঠিতে ড. মোমেন লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘গণতন্ত্রের একজন নির্ভীক কর্মী’ এবং তিনি ভোটাধিকার, খাদ্যের অধিকার এবং একটি উন্নত জীবনের অধিকার নিশ্চিত করতে অনেক কষ্ট করছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা তার ১৫ বছরের শাসনামলে উপনির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন, আঞ্চলিক নির্বাচন, মেয়র নির্বাচনসহ হাজার হাজার নির্বাচন পরিচালনা করেছেন। এসব নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া সবই অবাদ ও সুষ্ঠু হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ তার নাগরিকদের মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার প্রচার ও সুরক্ষায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী এবং আশাবাদী যে জাতিসংঘ ব্যবস্থা জাতীয় পর্যায়ে সবার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সঙ্গত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমৃদ্ধ ভবিষ্যত নিশ্চিত করার বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় বিশ্বস্ত অংশীদার হিসাবে কাজ করে যাবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ‘এটি বিশ্বের একমাত্র দেশ যারা গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য ৩০ লাখ জীবন উৎসর্গ করেছে।’
মোমেন বলেন, ‘তারা শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার পক্ষে একটি শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হিসাবে তাদের অবস্থান বজায় রেখেছে।’
চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি সক্রিয় ও সহায়ক সদস্য রাষ্ট্র। আমাদের জনগণের রাজনৈতিক অগ্রগতি ও আর্থ-সামাজিক মুক্তির লক্ষ্যে আমাদের জাতীয় যাত্রায় সহযোগিতা ও সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে উচ্চ প্রত্যাশা রয়েছে।’