যারা রাজনৈতিক কর্মসূচি দিচ্ছে, তারাই রেলে সহিংসতা করছে : রেলপথমন্ত্রী
রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, যারা রাজনৈতিক কর্মসূচি দিচ্ছে, তারাই রেলে সহিংসতা করছে।
আজ মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) রেল ভবনে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত রাজনৈতিক কারণে ট্রেনে নাশকতা সৃষ্টির বিষয়ে তেজগাঁও রেলস্টেশনে ঢাকা-নেত্রকোনা রুটে চলাচলকারী ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
রেলমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালেও এমন হয়েছে আর এখনো হচ্ছে। এখানে সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়া উচিত। আগে বাসে আগুন দিত, এখন রেল প্রধান আক্রমণের হাতিয়ার।
এ সময় বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তাদের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব গাজীপুরের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে। কিন্তু যখনই এমন রাজনৈতিক কর্মসূচি দিচ্ছে, তখনই এমন হচ্ছে। তার মানে, আপনি (বিএনপি) এটা না দিলেই পারেন। এর মাধ্যমে কি ধারণা পাওয়া যায় না যে, যারা কর্মসূচি দিচ্ছে তারাই সহিংসতা করছে?
নূরুল ইসলাম সুজন আরও বলেন, নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে নিরাপদ রেলযাত্রাকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে। গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো যে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিচ্ছে, এই সময়টাতে রেল সম্পর্কিত সহিংসতা বাড়ছে। রেলকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যে ফেলে হুমকি তৈরি করেছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। পরিকল্পিত দুর্ঘটনা ঘটাতে ফিশপ্লেট খুলে দিচ্ছে বলেও তিনি জানান।
রেলে দুর্ঘটনা কমাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, রেলের নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। রেলপথের ব্যাপারে যাতে সহযোগিতা করা হয়, সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, বৈঠক হয়েছে। যাতে সন্ত্রাসীরা এ ধরনের কর্মকাণ্ড করে রেল চলাচলে বিঘ্ন ঘটাতে না পারে।
মন্ত্রী জানান, আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে ২ হাজার ৭০০ আনসার সদস্য রেলের নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত হবে। এ বিষয়েও কাজ চলছে।
পরের তিন দুর্ঘটনা সম্পর্কে রেলমন্ত্রী বলেন, ২২ নভেম্বর সিলেটে উপবন এক্সপ্রেসে আগুন ধরানো হয়। ১৩ ডিসেম্বর গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে ২০ ফুট রেলওয়ে ট্র্যাক কেটে ফেলা হয়। এ ঘটনায় একজন যাত্রী মারা যায় এবং ৫০ জন আহত হয়। আরও অনেক বেশি হতাহত হতে পারত। ঘন কুয়াশার জন্য ট্রেন আস্তে চলছিল বলে রক্ষা পাওয়া যায়।
রেলপথমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এরপর আজ মঙ্গলবার বিমানবন্দর স্টেশন ছেড়ে (মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস) যখন তেজগাঁওয়ে আসে, তখন আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তিনটি কোচ পুড়ে যায়, আর এখন পর্যন্ত চারজন মারা গেছে। যে কেউ রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতেই পারে, কিন্তু সহিংসতা করতে পারে না।’
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথেও নাশকতার চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘কর্ণফুলী সেতু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথের অনেক যন্ত্রাংশ চুরি করার নামে খুলে নেওয়া হয়েছে, যেন ট্রেন চলাচল করতে না পারে। তারা মনে করছে, এ ধরনের নাশকতা ঘটিয়ে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা করা সম্ভব।’