নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, মেরিন সেক্টরে বাংলাদেশ বিশাল সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন করা হচ্ছে, চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল সৌদি আরবের রেড সী গেটওয়ে টার্মিনালকে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হচ্ছে। মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন হচ্ছে। নতুন পায়রা বন্দরের কাজ চলমান। বঙ্গবন্ধু মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি, নতুন নতুন মেরিন একাডেমি, মেরিটাইম ইনস্টিটিউট নির্মিত হচ্ছে। এসব নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের মেরিটাইম সেক্টর আরও এগিয়ে যাবে।

নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী আজ রোববার (৩১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, চট্টগ্রামের ‘৫৭ ব্যাচ ক্যাডেটদের গ্র্যাজুয়েশন প্যারেড’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশ মেরিটাইম সেক্টরের স্থপতি ও মেরিটাইম শিক্ষার স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার পরপরই ব্রিটিশ সরকারের কারিগরি সহায়তায় বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭৩ সালে ‘ডেভেলপমেন্ট অব মেরিন একাডেমি’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পটির আওতায় একাডেমির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের কাজ শুরু হয় এবং পর্যায়ক্রমে এটি একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে উন্নীত হয়।”

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নতির স্বর্ণশিখরে আরোহণের জন্য শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। উপযুক্ত শিক্ষা আর প্রশিক্ষণের যুগপৎ সমন্বয়ে সফলতা সুনিশ্চিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার গুরুত্ব অনুবাধন করেছেন। নারী শিক্ষার বিষয়ে তিনি আপসহীন। তারই উৎসাহে ২০১২ সাল থেকে এই একাডেমিতে নারী ক্যাডেটরা যোগদান করার সুযোগ লাভ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায়ে, ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণ ফি চার লাখ টাকা থেকে হ্রাস করে এক লাখ টাকা করা হয়েছে। মেরিন একাডেমির তিন বছর মেয়াদী ব্যাচেলর (পাস) ডিগ্রি কোর্সকে চার বছর মেয়াদী স্নাতক (সম্মান) কোর্সে উন্নীত করা হয়েছে। মেরিটাইম সেক্টরে মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিলেট, রংপুর, বরিশাল ও পাবনায় চারটি মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পেশাগতভাবে দক্ষ, বুদ্ধিদীপ্ত এবং চৌকস মেরিন ক্যাডেট তৈরির মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে।’

নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) নির্বাহী পরিষদে বাংলাদেশ ক্যাটাগরি ‘সি’-তে জয়লাভ করেছে। বিজয়ের মাসে এটি আরেকটি বড় অর্জন। এই অর্জন বাংলাদেশের পক্ষে বৈশ্বিক মেরিটাইম সেক্টর এবং সম্প্রদায়ের ব্যাপক সমর্থনের প্রমাণ।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম সোহায়েল এবং বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি, চট্টগ্রামের কমান্ড্যান্ট (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ক্যাপ্টেন আই কে তৈমুর বক্তৃতা করেন। নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর এম মাকসুদ আলম, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর জিয়াউল হক অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী ক্যাডেটদের সালাম গ্রহণ, কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও পুরস্কার প্রদান করেন। সেরা ক্যাডেট নির্বাচিত হয়ে প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল পেয়েছেন রোকনউদ্দিন চৌধুরী। সিলভার মেডেল পেয়েছেন রিফাত তালুকদার এবং মো. আল আমিন তালুকদার। দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ ক্যাডেট নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের গোল্ড মেডেল পেয়েছেন আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ আবিদুর রহমান। দুই বছর মেয়াদি এ শিক্ষা কোর্সে ২৭২ জন অংশ নেয়।