নতুন বইয়ের ঘ্রাণে উল্লাসে মাতোয়ারা প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী
নতুন বছরের প্রথমদিনে ‘বই উৎসব’ হচ্ছে আজ। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিয়ে উল্লাসে মেতে উঠেছে প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী। আজ সোমবার (১ জানুয়ারি) এবার প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদরাসাসহ বিভিন্ন স্তরে তিন কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার ৩২৪ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭টি বই বিতরণ করা হচ্ছে।
২০২৪ শিক্ষাবর্ষের জন্য গতকাল রোববার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। আজ সোমবার থেকে সারাদেশে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হচ্ছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারও নতুন বছরের প্রথম দিনে প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘বই বিতরণ উৎসব-২০২৪’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে তিন কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার ৩২৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭ কপি বই ছাপা হচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা। প্রথম, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ছাপানো হয়েছে পাঁচ কোটি ৩৮ লাখ তিন হাজার ৪২৩ কপি বই। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই সংখ্যা তিন কোটি ৩৬ লাখ এক হাজার ২৭৪টি। প্রাক-প্রাথমিকের জন্য ৬১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭৮ কপি বই ছাপা হয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে মোট বই ছয় কোটি ৪৫ লাখ ৪৮ হাজার ৩০৮ কপি, সপ্তম শ্রেণিতে চার কোটি ৪৫ লাখ ৫৭ হাজার কপি, অষ্টম শ্রেণির জন্য পাঁচ কোটি ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার ২৭১ কপি এবং নবম শ্রেণির জন্য পাঁচ কোটি ছয় লাখ ৮৪ হাজার ৫৭৩ কপি বই ছাপা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর (পাঁচটি ভাষায় রচিত) শিশুদের জন্য এবার মোট দুই লাখ পাঁচ হাজার ৩১ কপি বই ছাপা হচ্ছে। অন্য বইয়ের মধ্যে পাঁচ হাজার ৭৫২ কপি ‘ব্রেইল’ বই ছাপা হবে। তা ছাড়া শিক্ষকদের ৪০ লাখ ৯৬ হাজার ৬২৮টি ‘শিক্ষক সহায়িকা’ দেওয়া হবে। দেশের প্রতিটি উপজেলায় ইতোমধ্যে পাঠ্যপুস্তক পাঠানো হয়েছে।
বর্তমান সরকার ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে ৪৬৪ কোটি ৭৮ লাখ ২৯ হাজার ৮৮৩ কপি বই বিনামূল্যে বিতরণ করেছে। এ ছাড়া ২০১৭ সাল থেকে সরকার সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর শিশুদের তাদের মাতৃভাষায় অধ্যায়নের জন্য চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদরি ভাষার বই বিতরণের পাশাপাশি অন্ধ শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বই বিতরণ করছে।