কুষ্টিয়ায় বাবা-ছেলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
কুষ্টিয়ার আলফার মোড় থেকে রেজাউল করিম মধু (পূর্ব নাম মধুসূদন রায়, ৩৮) ও মুগ্ধ হোসাইন (৭) নামে বাবা-ছেলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে শহরতলীর আলফার মোড়ের মো. সেলিমের বাড়ি থেকে ভাড়াটিয়া মধু ও মুগ্ধ নামের ঐ বাবা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পারিবারিক কলহে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মধু আজ (শনিবার) দুপুর ১২টার দিকে ছেলে মুগ্ধকে হরেকৃষ্ণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করার কথা বলে তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সন্তানকে নিয়ে ফিরে না আসায় স্ত্রী শেফালি খাতুন বিকেলে তাদের ভাড়া বাসায় আসেন। এসে ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে ডাকাডাকি করেন। এরপর কোনো সাড়া না পেয়ে জানালার ছিদ্র দিয়ে দেখতে পায় তাঁর স্বামী ও সন্তান ঘরের মধ্যে একই রশিতে ঝুলে আছে। তাঁর আর্তচিৎকার প্রতিবেশীরা এসে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মধুর স্ত্রী শেফালী খাতুন বলেন, আজ সকালে আমার বাবার বাড়ি থেকে ছেলে মুগ্ধকে স্কুলে ভর্তি করার কথা বলে নিয়ে আসে আমার স্বামী মধু। এরপর দুপুরে অনেকবার কল করলেও সে রিসিভ করেনি। পরে বিকেলের দিকে বাবার বাড়ি থেকে ভাড়া বাসায় এসে দেখি দরজা জানালা বন্ধ। পরে স্থানীয়রা জানালা ভেঙে দেখে দুজনের মরদেহ ঝুলছে। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে তা জানি না।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. সোহেল রানা জানান, দুপুরের পর যে কোনো সময় মধু তার ছেলেকে হত্যার পর মধু নিজে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ধর্মান্তরিত হওয়ার পর নিহত রেজাউল তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন নিয়ে বেশ জটিলতায় ভুগছিলেন। যার জন্য সে তার ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারেনি। সেই ক্ষোভ থেকেও এই পথ বেছে নিতে পারেন। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে সঠিক তথ্য জানা যাবে। এসময় তার স্ত্রী শেফালি খাতুন বাড়িতে ছিলেন না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিহতের মরদহে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত মধুসূধন শহরের আলফা মোড় এলাকার বিষ্ণুপদ রায়ের ছেলে। সে ৮ বছর আগে হিন্দুধর্ম থেকে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে শেফালি খাতুনকে বিয়ে করেন। আলফার মোড়ে তার ছোট একটি সোনার দোকান রয়েছে।