দ্বাদশ জাতীয় সংসদকে প্রত্যখ্যান করে ‘লালকার্ড’ দেখাল এবি পার্টি
‘লাল কার্ড’ কর্মসূচি পালন করেছে আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। আজ মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনকে প্রত্যাখ্যান করে লালকার্ড প্রদর্শন ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করে তারা। এ সময় দলটির নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের খই ফোটালেও মনে মনে তারা স্বৈরাচার। এই দলের নেতারা বাংলাদেশকে এক ভয়াবহ অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
আজ বিকাল সাড়ে ৩টায় এবি পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয়-৭১ চত্বরে বিক্ষোভের আগের সমাবেশে কথা বলেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা। পরে মিছিল নিয়ে বিজয়নগর, নাইটিঙ্গেল, পল্টনসহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করেন নেতাকর্মীরা।
দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বি এম নাজমুল হকের সঞ্চালনায় মিছিলের আগে সমাবেশে বক্তব্য দেন এবি পার্টির আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, যুবপার্টির আহ্বায়ক এ বি এম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন প্রমুখ।
সোলায়মান চৌধুরী বলেন, প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে জাল জালিয়াতি করে ডামি সংসদ গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। সংবিধান লঙ্ঘন করে এই সংসদের সদস্যরা অবৈধভাবে শপথ নিয়েছে। আমরা ভোট চুরি করা এই সংসদকে লালকার্ড প্রদর্শন করে বয়কটের আহ্বান জানাচ্ছি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এবি পার্টির এই সংগ্রাম চলছে, চলবে ইনশাআল্লাহ।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও সে আদতে মনে মনে স্বৈরাচার। সেজন্য সে সুযোগ পেলেই বাকশালের রূপ ধারণ করে।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, “স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম গুমের শিকার হয়েছিলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান। ‘স্টপ জেনেসাইড’ (গণহত্যা বন্ধ করুন), বার্থ অব অ্যা নেশন (একটি জাতির জন্ম) নামে ইংরেজিতে ডকুমেন্টারি করে সারা দুনিয়াতে মুক্তযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরি করেছিলেন তিনি। ১৯৭২ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কৃতি চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান ঘোষণা দেন, বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পেছনে নীলনকশা উদ্ঘাটনসহ মুক্তিযুদ্ধের সময়ের অনেক গোপন ঘটনার নথিপত্র, প্রামাণ্য দলিল তার কাছে আছে, যা প্রকাশ করলে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশের মন্ত্রীসভায় ঠাঁই নেওয়া অনেক নেতার কুকীর্তি ফাঁস হয়ে পড়বে। আগামী ৩০ (১৯৭২ সালের) জানুয়ারি সন্ধ্যায় এই প্রেসক্লাবে ফিল্ম শো প্রমাণ করে দেবে কার কী চরিত্র ছিল?’ ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১-এ বড় ভাই শহীদুল্লাহ কায়সারকে খুঁজতে গিয়ে অনেক থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসে। ওনার স্ত্রী অভিনেত্রী সুমিতা, শ্যালিকা অভিনেত্রী ববিতা, বোন, ছেলে সবাই মনে করেন, তৎকালীন সরকার এই গুমের সঙ্গে জড়িত। এ রকম একটা ঐতিহাসিক দিনে প্রথম গুম দিবসে ভোট ডাকাতরা সংসদের দখল নিয়েছেন, এটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।”
লালকার্ড মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, অধ্যাপক আবু হেলাল, শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, মাসুদ জমাদ্দার রানা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, কেফায়েত হোসেন তানভীর, আহমেদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, যুবপার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব সুলতানা রাজিয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সেলিম খান, এনামুল হক, মশিউর রহমান মিলু, খাইরুল ইসলাম, আমেনা বেগম, ফেরদৌসী আক্তার অপি, পল্টন থানা আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সী, যাত্রাবাড়ী থানা সমন্বয়ক সিএম আরিফ প্রমুখ।