সাজেকে দুই সশস্ত্র সংগঠনের গোলাগুলিতে এক শিশু আহত
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে পাহাড়ের দুই আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। আজ রোববার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে সাজেক ইউনিয়নের শিয়ালদহলুই মৌজায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। তবে এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় খবর মিলেছে বেশ দেরিতে।
এই ঘটনায় পেটে গুলি লেগে এক শিশু আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানাচ্ছে, আহত শিশুটির নাম রোমিও ত্রিপুরা (৭)। সে শিয়ালদহলুই মৌজার প্রবেন ত্রিপুরার সন্তান।
আজ দুপুরে সাজেক ইউনিয়নের গণ্ডাছড়া-মালেংপাড়া এলাকায় পাহাড়ের দুই সংগঠনের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। আহত ছেলেটি বাড়ির বাইরে বের হলে তার পেটে গুলি লাগে। এলাকাটি প্রত্যন্ত এবং অতি দুর্গম হওয়ায় আহত শিশুটিকে উদ্ধার করে আনতে সময় লাগছে বলে জানিয়েছেন সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অতুলাল চাকমা বলেন, ‘আজ দুপুরের দিকে জেএসএস এবং ইউপিডিএফের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। যেখানে গোলাগুলি হচ্ছিল সেখানে চারটি বাড়ি রয়েছে। বাড়ির মধ্য থেকে ছেলেটি বের হলে তার পেটে গুলি লাগে। এলাকাটি সাজেকের রুইলুই পর্যটন কেন্দ্রের কংলাক পাহাড় থেকে আরও ১৫ থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে। ওখানে গাড়ি বা অন্যান্য যানবাহন যাওয়ার ব্যবস্থা নেই। তাই গ্রামবাসী আহত ছেলেটিকে নিয়ে হেঁটে কংলাক পাহাড়ের উদ্দেশে রওনা করেছে দুপুরে। তবে তারা এখনও এসে পৌঁছায়নি। কংলাক পাহাড়ে তাদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স অপেক্ষা করছে। তাঁরা পৌঁছালে ছেলেটিকে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে আনা হবে। আমি এখনও মাচালং বাজারে তাদের জন্য অপেক্ষা করছি।’
সাজেক ইউনিয়নের শিয়ালদাহলুই এলাকার মেম্বার জোপ্পুইথাং ত্রিপুরা গুলাগুলির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিকেলের দিকে থেমে থেমে আনুমানিক ২৫০ থেকে ৩০০ রাউন্ড গুলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এ সময় গুলির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে দৌড়ে ঘরে যাওয়ার পথে রোমিও ত্রিপুরা গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বিজিবির শিয়ালদাহলুই বিওপিতে নিয়ে এলে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাজেকের দিকে পাঠানো হয়েছে।
বাঘাইছড়ি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল আউয়াল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সাজেকে গোলাগুলির ঘটনায় এক শিশু আহত হওয়ার সংবাদ আমরা পেয়েছি। তবে এলাকাটি অতি দুর্গম হওয়ায় শিশুটিকে আনতে সময় লাগছে। আহত শিশুটির চিকিৎসার জন্য সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি সাজেকের মাচালং ব্রিজপাড়ায় ইউপিডিএফের দুই সদস্য দীপায়ন চাকমা ও আশীষ চাকমাকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য জেএসএসকে (সন্তু লারমা) দায়ী করেছে ইউপিডিএফ।