আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল। তারা দেশ, জনগণ ও স্বাধীনতার শত্রু। বিএনপি-জামায়াত তাদের অপকর্মের সাজা যেন যথাযথভাবে পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না, উন্নয়ন করে জবাব দেয়।’ 

আজ বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে গণভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিল, কিন্তু পারেনি। এখনও শুনি সরকার উৎখাত করে ফেলবে। সরকারের পায়ের নিচে নাকি মাটি নেই! তাদের পায়ের নিচে মাটি আছে নাকি, এটাই আমার প্রশ্ন। আমার যাত্রাপথ এত সহজ ছিল না। নানা রকম ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলেছিল, আর এখনও সেই ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত আছে। এত চড়াই-উতরাই পার হয়ে আজকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ বারবার ক্ষমতায় আসবে, এটা কখনও কেউ ভাবতে পারেনি।’

স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিশাল জনসভা, সেখানে দাঁড়িয়ে এ কথাই বলেছিলাম–বাংলাদেশের জনগণই আমার পরিবার। এই বাংলাদেশের জনগণই আমার আপনজন। তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যেভাবে আমার বাবা তার জীবন উৎসর্গ করেছেন, যেভাবে আমার মা-ভাইয়েরা জীবন দিয়ে গেছে, প্রয়োজনে আমিও আমার বুকের রক্ত ঢেলে দেব, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। আমার চলার পথে প্রতি পদে পদে বাধা। এখনও মনে পড়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, আইভি রহমানসহ আমাদের কতজন জীবন দিয়েছেন। তাদের ওপর কত রকম অত্যাচার হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আদর্শের নেতাকর্মী, অত্যাচার-নির্যাতন ভোগ করে সংগ্রাম করেই আমরা ক্ষমতায় ফিরতে পেরেছি।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, ‘একটি বৈরী পরিবেশ, কোনো জায়গা থেকে কোনো সহযোগিতা আমরা পাইনি। আমাদের একমাত্র শক্তি শুধু মানুষের সমর্থন। মানুষের ভালোবাসাই হচ্ছে আমাদের প্রেরণা, আর সেই মানুষের জন্যই কাজ করা।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘রাসেলকে পর্যন্ত হত্যা করেছিল এই কারণে যে, বঙ্গবন্ধুর রক্তের কেউ যেন আর কখনও ক্ষমতায় আসতে না পারে। জানি না, আল্লাহ বাঁচিয়ে রেখেছিলেন, বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। কখনও গুলি, কখনও বোমা, কখনও গ্রেনেড হামলা, অনেক কিছু আমাকে মোকাবিলা করতে হয়েছে।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমার পার্টির লোকজন মানবঢাল রচনা করে আমাকে বারবার রক্ষা করেছে। নিজেদের জীবন দিয়ে গেছে। যারা বিভিন্ন সময় জীবন দিয়ে গেছে তাদের আমি সব সময় স্মরণ করি, তাদের জন্য দোয়া করি। এত চড়াই-উতরাই পার হয়ে আজকে আওয়ামী লীগ বারবার ক্ষমতায় আসবে, এটা কখনও কেউ ভাবতে পারেনি। ৯৬ থেকে ২০০১, এরপর ২০০৮ এর নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারে আছে।’

মনোনয়নপ্রত্যাশীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘মনোনয়ন না পেলেও নেতৃত্ব দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা যেন চলে না যায়। নিজে কী পেলাম, তা না ভেবে জনগণের জন্য কাজ করে যেতে হবে। কাউকে পিছিয়ে রেখে নয়, সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। নিজে কী পেলাম, তা চিন্তা করলে নিজেও উঠতে পারবে না, কাউকে টেনেও তুলতে পারবে না। জনগণের কাছে গিয়ে তাদের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। নিজের যোগ্যতায় কাজ করে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে।’