হয়রানি ও দুর্নীতিমুক্ত সরকারি পরিষেবা নিশ্চিত করা হবে : দুদক কমিশনার
দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক বলেছেন, উন্নত রাষ্ট্র বিনির্মাণে দুর্নীতি সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। তাই, দুর্নীতি দমন কমিশন সমাজ থেকে দুর্নীতি নির্মূলে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গণশুনানির মাধ্যমে জনগণের হয়রানি ও দুর্নীতিমুক্ত সরকারি পরিষেবা প্রদান নিশ্চিত করা হবে।
আজ বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে গোপালগঞ্জ শহরের শেখ ফজলুল হক মনি স্মৃতি মিলনায়তনে দুর্নীতি দমন কমিশন আয়োজিত ১৬৪তম গণশুনানিতে দুদক কমিশনার এসব কথা বলেন।
সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দুদক কমিশনার বলেন, জনগণকে সরকারি সেবা প্রদান করা আপনার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। সেবা প্রদানে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আন্তরিকতার সাথে সকলকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ দায়িত্ব পালনে ন্যূনতম দুর্নীতি, হয়রানি কমিশন সহ্য করবে না।
দুদক কমিশনার আরও বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের গণশুনানি সম্পর্কিত নীতিমালার আলোকে জনগণের জন্য প্রদত্ত সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিষেবা দক্ষ ও কার্যকর উপায়ে প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে সততা, নিষ্ঠা ও মূল্যবোধের মান বজায় রাখা এবং কোন ব্যক্তি যাতে অনুপার্জিত আয় ভোগ করতে না পারে এ লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধ বিষয়ক বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রতিটি অভিযোগ পরবর্তীতে কমিশন থেকে মনিটরিং করা হবে এবং অভিযোগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলমের সঞ্চালনায় ‘রুখবো দুর্নীতি গড়বো দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের গণশুনানি সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে চলে দুপুর পর্যন্ত।
গণশুনানিতে অভিযোগকারীদের ৫৭টি অভিযোগের শুনানি হয়। সেখানে অভিযুক্ত জেলার সকল সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও ব্যক্তি অভিযোগের যুক্তি খণ্ডানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্যে তাৎক্ষণিক বেশ কয়েকটি অভিযোগের সমাধান হয়। চারটি অভিযোগ সরাসরি দুদক অনুসন্ধান করবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেই সাথে দুর্নীতি ও অনিয়মের বাকি অভিযোগগুলো নিয়ে তদন্ত করে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন দুদক কমিশনার।
শুনানিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা, সকল প্রকৌশল দপ্তর, শিক্ষা বিভাগ, সমাজসেবা অধিদপ্তর, বিআরটিএ, পাসপোর্ট, সাব-রেজিস্ট্রার, হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তাদের তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এসময় কমিশন ও জনসাধারণের সামনে অভিযোগকারীরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে জর্জরিত করেন। অভিযুক্তরা অনেকে দুর্নীতির বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, অনেকে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। দুর্নীতির মধ্যে হাসপাতালের মালামাল ক্রয়ে অনিয়ম, বিআরটিএ, বিভিন্ন প্রকৌশল অধিদপ্তর, মুক্তিযোদ্ধাদের টাকার বিনিময়ে ঘর পাইয়ে দেওয়াসহ নানা অভিযোগ পান।
গণশুনানিতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, পরিচালক মো. মোরশেদ আলম, পুলিশ সুপার আল-বেলী আফিফা, দুদক গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. সিফাত উদ্দিন, মাদারীপুর জেলা দুদকের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি প্রফেসর সরদার নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মানিক প্রমুখ।