বন্ধুর মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে কুমিল্লায় কুয়েতি নাগরিক, প্রাণ-প্রকৃতিতে মুগ্ধ
‘আমি এখন বাংলাদেশে। আমার বন্ধুর মেয়ের বিয়েতে এসেছি। এখানকার কৃষি জমিতে ফসল সুন্দর। মানুষজন আমাকে আপন করে নিয়েছে। আমি খুব আনন্দে আছি। বিয়েতে দারুণ সব খাবারের আয়োজন করেছে। আমি মুগ্ধ। বন্ধুরা তোমারা ভিডিওতে দেখো।’ এভাবেই আরবি ভাষায় নিজের মনের সুখানুভূতি প্রকাশ করেছেন কুয়েতি নাগরিক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আল বন্দর।
গত কয়েকদিন আগে বন্ধুর মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া গ্রামে আসেন আবদুল্লাহ। বন্ধুর মেয়ের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে সবকিছুতেই মুগ্ধ হয়েছেন তিনি। গ্রামের প্রাণ-প্রকৃতিও তাকে মুগ্ধ করেছে।
এদিকে, নিজের বাড়িতে কুয়েতি বন্ধুকে পেয়ে আনন্দিত ইকবাল হোসেন। তাকে ঘিরে গ্রামবাসীর মধ্যেও উৎসাহ-উদ্দীপনা রয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে দেখা যায়, স্থানীয়দের নিয়ে কুয়েতি নাগরিক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আল বন্দর গ্রামের মাঠেঘাটে ঘুরে ঘুরে ছবি তুলছেন। নিজের মোবাইল ফোন থেকে লাইভ করছেন। শিশুদের মতো উল্লাস প্রকাশ করছেন। সব বয়সের মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে আনন্দ করছেন।
কুয়েতি এই নাগরিকের সঙ্গে বন্ধুত্বের শুরুর কথা স্মৃতিচারণ করে ইকবাল হোসেন বলেন, ‘২০১৫ সালে আমি কুয়েতে যাই। সেখানে কাজের সুবাদে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। এখন অবসরে আছেন। কাজের সুবাদে আমাদের সম্পর্ক গাঢ় হয়। আমরা একে অপরের বন্ধু হই। বয়সের একটু ব্যবধান থাকলেও আমাদের মনে কোনো ব্যবধান নেই।’
ইকবাল হোসেন বলেন, ‘গত বছরের শেষ দিকে আমি আমার বন্ধু আবদুল্লাকে বলি আমার মেয়ের বিয়ের বিষয়ে। সে আমাকে বলে তোমার মেয়ের বিয়ে দেখতে তোমার দেশে যাব। যেই কথা সেই কাজ। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সে কুয়েত থেকে আমার বাড়িতে আসে। আমি খুব অবাক হয়েছি। সে এখানে খুব আনন্দ করছে৷ আমার মেয়ের বিয়েতে এসে ছবি-ভিডিও তুলে রাখছে। কুয়েতে গিয়ে সবাইকে দেখাবে৷’
ইকবালের ভাই এস এন ইউসুফ বলেন, ‘আমার ভাতিজির বিয়েতে একজন কুয়েতি নাগরিক এসেছেন। তিনি আমার ভাইয়ের বন্ধু। অন্য একটি দেশ থেকে এসে তিনি যে আনন্দ পাচ্ছেন, আমার কাছে খুবই ভালো লাগছে। কুয়েতি নাগরিক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ আল বন্দর আমাদের গ্রামে এ বিয়েতে অংশগ্রহণ করাতে বিয়ের উৎসব আরও দ্বিগুণ হয়েছে।’
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান বলেন, ‘শুনেছি একজন কুয়েতি নাগরিক চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়নে তার বন্ধুর মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছেন। তিনি বেশ কিছুদিন বাংলাদেশে অবস্থান করবেন। কুয়েতি নাগরিকের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বসহ দেখছি। তার আগমনে আমরা স্বাগত জানাই।’