‘চাময়’ উৎসবে মেতেছে ম্রো জনগোষ্ঠী
বান্দরবানের পাহাড়ে চাষ করা জুমের নতুন ফসল ঘরে তুলতে ‘চাময় উৎসবে মেতেছে ম্রো জনগোষ্ঠীরা। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে চিম্বুক পাহাড়ের ম্রোলংপাড়া মাঠে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। জুমের নতুন ফসল কিংবা নবান্নকে ম্রো ভাষায় বলা হয় ‘চাময়’।
এই চাময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আতাউর রহমান।
এ সময় জেলা পরিষদের সদস্য সিয়ং খুমী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক মংনুচিং মারমা, গবেষণা কর্মকর্তা ক্যা ওয়াই ম্রো, ত্রিপুরা পরিচালক গাব্রিয়াল ত্রিপুরাসহ পাহাড়ের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে উৎসবে শুরুতে ম্রোলংপাড়া থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার বের করা হয়। এতে অংশ নেন ম্রোলংপাড়া, বসন্তপাড়া, নোয়াপাড়াসহ তিন পাড়া-গ্রামের ৫০০ পরিবার। নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে উৎসবের শোভযাত্রায় যোগ দেন নারী-পুরুষরা। পরে ম্রোদের তৈরি বিভিন্ন রকমের পিঠা উপস্থাপন করা হয়। এর আগে ম্রোদের ঐতিহ্যবাহী প্রুং পে প্রুং সুরের নৃত্য পরিবেশ করেন সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আতাউর রহমান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ পুরো বাংলাদেশে প্রায় ৫০টি জাতিগোষ্ঠীর ভাষা রয়েছে। সব জাতিগোষ্ঠীর ভাষাকে এক কাতারে আনার জন্য বর্তমান সরকার বড় পরিসরে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। প্রত্যেকটি অঞ্চলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। আমরা সংস্কৃতি আর ভাষা তুলে ধরার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে ম্রো জনগোষ্ঠীর লেখক ও গবেষক সিইয়ং ম্রো বলেন, জনসংখ্যায় বান্দরবান জেলায় ম্রো জনগোষ্ঠী প্রায় এক লাখের বেশি। বসবাস করেন থানচি, রুমা, আলীকদম ও চিম্বুকসহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায়। জীবিকা নির্বাহের প্রধান মাধ্যম হলো জুম ও বিভিন্ন ফলাদি চাষ। জুম চাষ করে সারা বছর চলে তাদের সংসার। জুম থেকে যেসব নতুন ফসল উৎপাদিত হয় সেসব খাদ্য শস্যকে পাড়াবাসী মিলে জুম দেবতাদের উদ্দেশে উৎর্সগ করে। এ সময় ‘চাময়’ উদযাপন করেছে ম্রো সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী।