ভবনটা যেন আগুনের চুল্লি, শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছে বেশির ভাগ মানুষ : ফায়ার সার্ভিসের ডিজি
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেছেন, ‘ভবনের প্রতিটি ফ্লোরের সিঁড়িতে ছিল সিলিন্ডার। আগুনে দগ্ধ হওয়ার চেয়ে বেশির ভাগ মানুষ শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।’
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের ‘কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট’ ভবনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের ডিজি।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘দ্বিতীয় তলা ছাড়া ভবনটার প্রতিটি ফ্লোরের সিঁড়িতে ছিল সিলিন্ডার। যেটা খুবই বিপজ্জনক ব্যাপার। কারণ, আগুন লাগলে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়, যা ভয়ঙ্কর ও বিপজ্জনক। ভবনটা মনে হয়েছে অনেকটা আগুনের চুল্লির মতো।’
ব্রিগেডিয়ার মাইন উদ্দিন বলেন, ‘কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট ভবনের দ্বিতীয় তলায় কাপড়ের দোকান ছিল। আমাদের দেখামতে, ভবনের অন্যান্য ফ্লোরে রেস্টুরেন্ট ছিল। যেগুলোতে আমরা গ্যাস সিলিন্ডার দেখেছি। যে কারণে আগুনটা দ্রুত ছড়িয়েছে এবং দাউ দাউ করে জ্বলেছে।’
ফায়ার সার্ভিসের ডিজি আরও বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে দেখছি, ভবনটা অত্যন্ত বিপজ্জনক বা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এ ভবনে মাত্র একটি সিঁড়ি। আমরা এখনও উদ্ধার অভিযান ও তল্লাশি চালাচ্ছি।’
ব্রিগেডিয়ার মাইন উদ্দিন বলেন, ‘আগুনে দগ্ধ না হয়ে মানুষ শ্বাসরুদ্ধ হয়ে অর্থাৎ অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন বা অবচেতন হয়েছেন। প্রত্যেকটি অগ্নিদুর্ঘটনার পর তদন্ত হয়। এক্ষেত্রেও তদন্ত হবে। চুলা থেকে অথবা গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।’
ফায়ার সার্ভিসের ডিজি আরও বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের ১৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করেছে। ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করেছে র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা।’
এ ঘটনায় পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে ‘কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে’ লাগা ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঘটনাস্থল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
জানা গেছে, এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে ২২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। আগুনের এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রেস্টুরেন্টটিতে আগুন লাগে। পরে তা পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ঘণ্টা চেষ্টা করে রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।