বেইলি রোড ট্র্যাজেডি প্রবাসী হওয়ার স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিল সাগরের
ঢাকার বেইলি রোডের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড প্রবাসী হওয়ার স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিল পাবনার ফরিদপুর উপজেলার ধানুয়াঘাটা গ্রামের যুবক সাগর হোসেনের (২০)। তাঁর মৃত্যুতে ফরিদপুর উপজেলায় চলছে শোকের মাতম।
দরিদ্র পরিবারের সন্তান সাগরের স্বপ্ন ছিল বিদেশে গিয়ে টাকা রোজগার করে মা-বাবাসহ পরিবারকে সুখে রাখবে কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণ হলো না তাঁর। পাচুরিয়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক মো. হাসান আলী ও সাবিনা খাতুনের আদরের সন্তান তিনি। দুই সন্তানের মধ্যে তিনি ছিল বড়। বাবা বিদেশে যাওয়ার টাকা দিতে পারেননি তাই তিনি টাকা জোগাড় করতে গত বছরের মাঝামাঝি ঢাকায় যান। একটি সিকিউরিটি গার্ড কোম্পানিতে চাকরি নেন তিনি। বেতনের সেই টাকা নিজে খরচের পর বাকিটা জমাচ্ছিলেন।
সাগরের বাবা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এবারের পেঁয়াজের দাম ভালো পাওয়া গেছে। ভেবেছিলাম সেই ফসল তুলে বিক্রির করে টাকা দিয়ে ছেলেকে বিদেশে পাঠাব। আজ সকালে পরিবার জানতে পারি সাগর আর বেঁচে নেই। গতকাল রাত ৮টার দিকে সে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলেছে। রাতে বিদেশ থেকে আমার ভাতিজা জানায় যে সাগর যেখানে চাকরি করে সেখানে আগুন লেগেছে। ’
সাগর হাদল ইউনুস আলী ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। আগুনে পুড়ে ছেলের মারা যাওয়া খবর পেয়ে আজ শুক্রবার সকালে ঢাকায় যান তাঁর বাবা হাসান আলী। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছেলের মরদেহ শনাক্ত করেন।
হাসান আলী আরও বলেন, আমার ছেলের মুখমণ্ডল বাদে পুরো শরীর পুড়ে গেছে। তবে চেহারাটা চেনা গেছে।
এদিকে সাগরের মা সাবিনা খাতুনে পুত্রশোকে যেন পাথর হয়ে গেছেন। বিছানায় পড়ে শুধু ডুকরে কাঁদছে।
হাদল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম সেলিম রেজা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, পরিবারটি খুব দরিদ্র। সাগরকে নিয়ে ওদের অনেক স্বপ্ন ছিল। তাঁর এই মর্মান্তিক মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ওই পরিবারটি শেষ হয়ে গেল।