বেইলি রোডে আগুনে নিহতদের পরিচয় মিলেছে
রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবন গ্রিন কোজি কটেজে আগুনের ঘটনায় নিহত ৪৬ জনের মধ্যে ৪১ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (১ মার্চ) স্বজনেরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাশঘরে তাদের মরদেহ শনাক্ত করেন।
যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে, তারা হলেন ঢাকার কাকরাইলের বাসিন্দা কুরবান আলীর মেয়ে ফৌজিয়া আফরিন ওরফে রিয়া (২২) ও তার বোন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আফরিন, মালিবাগের ২১৬ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা প্রলেনাথ রায়ের মেয়ে পপি রায় (৩৬), পুরান ঢাকার দয়াগঞ্জের শিপন পোদ্দারের মেয়ে সম্পনা পোদ্দার (১১), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মৃত জহিরুল ইসলামের ছেলে আশরাফুল ইসলাম ওরফে আসিফ (২৫), মতিঝিলের আরামবাগের বাসিন্দা নাজিয়া আক্তার (৩১) এবং তাঁর ছেলে আরাহাম মোস্তফা আহামেদ (৬), পুরান ঢাকার বেচারাম দেউড়ির বাসিন্দা মুসলেম আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম (৩২), কুমিল্লার মুরাদনগরের নবিপুরের সম্পা সাহা (৪৬), নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলার শান্ত হোসেন (২৪), মতিঝিল এজিবি কলোনির বাসিন্দা কবির খানের দুই মেয়ে মায়শা কবির ওরফে মাহি (২১) ও মেহেরা কবির দোলা (২৯), রমনা সার্কিট হাউস রোডের বাসিন্দা ও ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক লুৎফুর নাহার করিম ওরফে লাকি (৫০) এবং তাঁর মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী জান্নাতি তাজরিন ওরফে নিকিতা (২৩), মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার পূর্বচর আলীমবাগের মোহাম্মদ জিহাদ (২২), যশোর সদর থানার মধ্যপাড়ার বাসিন্দা কবির হাসানের ছেলে কামরুল হাসান (২০), ভোলা সদর থানার উত্তর পাড়ার মাঈনুল হকের ছেলে দিদারুল হক (২৩), মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার বাসিন্দা ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আতাউর রহমান ওরফে শামীম (৬৫), টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের বাসিন্দা মোয়াজ্জেম মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান (২৭), কুমিল্লা সদরের হাতিগাড়ার বাসিন্দা আবদুল কুদ্দুসের মেয়ে নুসরাত জাহান ওরফে শিমু (১৯)।
এ ঘটনায় এক পরিবারের পাঁচজন মারা গেছেন। তাঁরা হলেন ইতালিপ্রবাসী সৈয়দ মোবারক কাউসার (৪৮), তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার (৪০) এবং তাঁদের তিন সন্তান—সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা (১৬), সৈয়দা আমেনা আক্তার ওরফে নুর (১৩) ও সৈয়দ আবদুল্লাহ (৮)। সৈয়দ মোবারক কাউসারের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহবাজপুরে।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে আরও আছেন মুন্সীগঞ্জ সদরের বিনোদপুরের বাসিন্দা আওলাদ হোসেনের মেয়ে জারিন তাসনিম ওরফে প্রিয়তি (২০), বাড্ডা মডেল টাউনের বাসিন্দা ইসমাইল গাজীর ছেলে জুয়েল গাজী (৩০), মালিবাগ প্রথম লেনের রুবি রায় (৪০) ও তাঁর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা রায় (১৮), খিলগাঁওয়ের গোড়ানের বাসিন্দা দীনেশ চন্দ্র হাওলাদারের ছেলে তুষার হাওলাদার (২৩)। দীনেশ চন্দ্র হাওলাদারের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার তালগাছিয়ায়।
রাজধানীর বাসাবোর বাসিন্দা কে এম মিনহাজ উদ্দিন (২৫), তাঁর বাবা ওয়ালিউল্লাহ খান চাঁদপুর সদর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা; পাবনার ফরিদপুরের সাগর (২৪), পিরোজপুর সদরের বাসিন্দা নুরুল আলমের মেয়ে তানজিলা নওরিন (৩৫), শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার কালারচরের বাসিন্দা ফজর আলীর ছেলে শিপন (২১), বরিশাল শহরের কাউনিয়ার বাসিন্দা ফোরকানের মেয়ে আলিসা (১৩), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র নাহিয়ান আমিন (১৯), মালিবাগের বাসিন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক নাসিরুল ইসলাম লামিসা ইসলাম (২০), বরগুনার বাসিন্দা মো. নান্টুর ছেলে মো. নাঈম (১৮) এবং দ্য রিপোর্ট ডটকমের প্রতিবেদক অভিশ্রুতি শাস্ত্রী (২৫)।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, এই অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪৬ জনের মধ্যে ৪১ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন পাঁচটি মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে আছে।