অস্ত্রোপচার করে পেট থেকে জ্যান্ত কুঁচিয়া উদ্ধার
মাছ ধরতে গেলে সমরা মুণ্ডা নামে এক ব্যক্তির পেটে ঢুকে যায় প্রায় ২৫ ইঞ্চির একটি ইল (কুঁচিয়া) মাছ। পরে পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে প্রায় দেড় ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জীবিত উদ্ধার করা হয় মাছটি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে শংকামুক্ত আছেন ওই ব্যক্তি। গতকাল সোমবার (২৫ মার্চ) রাতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে ওই ব্যক্তির পেট থেকে জ্যান্ত ইল (কুঁচিয়া) মাছ বের করা হয়।
মাছ ধরতে গেলে পায়ু পথ দিয়ে কুঁচি মাছটি ওই ব্যক্তির পেটে ঢুকে যায় বলে জানা গেছে। পরে তীব্র পেট ব্যথা হলে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ওসমানী মেডিকেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা সমরা মুণ্ডা (৫৫) একজন কার্ডধারী জেলে। তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে মাছ ধরে স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করেন। গত ২৩ মার্চ তিনি স্থানীয় হাওরে মাছ ধরতে গেলে হঠাৎ কোমর সমান কাদায় আটকে যান। তখন তাঁর দুই হাতে থাকা দুটি কুঁচিয়া মাছের একটি পানিতে পড়ে যায় এবং আরেকটি কাদায় পড়ে। তখন তিনি অনুভব করেন তাঁর পায়ু পথে কী যেন ডুকছে। তবে সেটিকে গুরুত্ব দেননি তিনি। পরে তিনি সেখান থেকে বাড়িতে আসার পর পেটে প্রচুর ব্যথা অনুভব করেন। এরপর তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অস্ত্রোপচার করে রোগীর পেট থেকে জ্যান্ত কুঁচিয়া মাছ বের করেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের সার্জারি ইউনিট ২-এর প্রধান অধ্যাপক ডা. কাজী জানে আলমের নেতৃত্বে অস্ত্রোপচারে অংশ নেন ইউনিট ২-এর সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. রাশেদুল ইসলাম ও ডা. তৌফিক আজিজ শাকুর।
চিকিৎসকরা জানান, গত ২৪ মার্চ ওই রোগী তীব্র পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসেন। লোকটি মাছ ধরতে পানিতে নামলে পায়ুপথ দিয়ে জ্যান্ত একটি কুঁচিয়া মাছ পেটে ঢুকে যায়। রোগীর সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে গতকাল রাত সাড়ে ১০টায় অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচার চলে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। পরে পেট থেকে প্রায় ২৫ ইঞ্চি লম্বা কুঁচিয়া মাছ বের করতে সক্ষম হন তাঁরা।
সার্জারি ইউনিট ২-এর সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. রাশেদুল ইসলাম বলেন, জটিল একটি অপারেশন সবার সহযোগিতায় সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। মাছটি আক্রান্ত ব্যক্তির খাদ্যনালিকে ফুটো করে বেশ অনেকদূর এগিয়ে যায়। পেট কেটে বের করার সময়ও মাছটি জীবিত ছিল। আক্রান্ত ব্যক্তির প্রবল মৃত্যুঝুঁকি ছিল। প্রাথমিকভাবে তাঁকে আমরা রক্ষা করতে পেরেছি। তাঁর পরবর্তী জটিলতা হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে আছে।