বিনামূল্যে দেড় শতাধিক পরিবার পেল গরুর মাংসসহ ঈদ উপহার
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সমাজের দুস্থ ও গরিব দেড় শতাধিক পরিবারকে এক কেজি করে গরুর মাংস ও ঈদসামগ্রী উপহার দিয়েছে ‘আইডিয়াল সমাজসেবা ফাউন্ডেশন’নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
আজ শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের খাজুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে হতদরিদ্র মানুষের হাতে মাংস ও ঈদসামগ্রী উপহার হিসেবে তুলে দেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পারভেজ মোশারফ ও অন্যান্য সদস্যরা।
মূলত শহর এলাকায় সামর্থ্যবানদের মধ্যে কয়েকজন মিলে গরু কিনে কেটে ভাগ করে নিচ্ছে। এমন দৃশ্য চাঁদপুরের শহর ও গ্রামে। কিন্তু নিম্নআয়ের ও দরিদ্র লোকজন এক কেজি মাংস কেনার কিংবা ভাগে নেওয়ার সামর্থ্য নেই। তাই এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন তরুণ এই যুবকরা।
স্থানীয় আদশা গ্রামের হতদরিদ্র ইসমাইল বলেন, গত বছরও ঈদের আগে এই সংগঠনের লোকজন আমাদেরকে গরুর মাংস ও ঈদসামগ্রী দিয়েছে। এবছরও দিয়েছে। আমাদের সামর্থ্য নেই গরুর মাংস কেনার। তাদের এই সহযোগিতা পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত।
পাশের হুগলি গ্রামের কর্মক্ষম রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার দুই হাতে শক্তি নেই। কোন কাজ করতে পারি না। এই যুবসমাজ গত বছরও আমাদেরকে সহযোগিতা করেছে। এবারও উপহার নিতে এসেছি।
খাজুরিয়া গ্রামের সেলিম মোল্লা বলেন, আমার হাঁপানি রোগ। কোন কাজ করতে পারি না। তাদের এই সহযোগিতা আমার জন্য অনেক কিছু।
একই গ্রামের মনোয়ারা বেগম বলেন, আমি খুবই অসহায়। মাংস কেনার সামর্থ্য নেই। কোনরকম সংসার চলে। গত বছরও মাংস ও ঈদসামগ্রী পেয়েছি। এবারও দিয়েছে। তাদের জন্য দোয়া করি, ভবিষ্যতেও আমাদের সহযোগিতা করতে পারে।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পারভেজ মোশারফ বলেন, আমরা এবার ১৫০ পরিবারকে ১ কেজি মাংস ও ঈদসামগ্রী দিয়েছি। যারা হচ্ছে আমাদের এই গ্রামের নিম্নআয়ের ও দরিদ্র পরিবার, তাদেরকেই দেওয়া হয়েছে। আমি আশা করবো সমাজের অন্যরা যদি এভাবে এগিয়ে আসে, তাহলে আমাদের পাশের দরিদ্র পরিবারগুলো ঈদ কিংবা অন্য উৎসবে ভাল খেতে ও থাকতে পারবে। আমাদের এই কাজে সংগঠনের সকল সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষী লোকজন সহযোগিতা করেছে।
গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ বলেন, করোনাকালীন সময় থেকে এই সংগঠনের ছেলেরা সহযোগিতা নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের সামাজিক কাজগুলো অব্যাহত থাক। গত বছর শতাধিক পরিবার এবং এ বছর ১৫০ পরিবারকে এক কেজি করে গরুর মাংস ও ঈদসামগ্রী উপহার দিয়েছে। তাদের এই কাজকে আমি স্বাগত জানাই। ভাল কাজে আমার সবসময় সহযোগিতা ছিল, আগামীতেও থাকবে। সংগঠনের অধিকাংশ সদস্য শিক্ষার্থী। তাদের এই মহতী উদ্যোগ সমাজের জন্য উদাহরণ বলে আমি মনে করি।