রমনা বটমূলে হামলা রায় নিষ্পত্তি হয়নি ২৩ বছরেও
২৩ বছর আগে ২০০১ সালে রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ১০ জন। এ ঘটনায় করা দুটি মামলার মধ্যে হত্যা মামলার বিচার সম্পন্ন হয়েছে ঢাকার বিচারিক আদালতে। তবে, হাইকোর্টে মামলাটি নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। শীঘ্রই পেপারবুক রেডি করে তা শুনানির হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষ।
যদিও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের আরেকটি মামলার বিচার এখনো শেষ হয়নি। মামলাটিতে ৮৪ জনের মধ্যে ৫৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এ মামলায় আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। মামলাটি ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।
ওই আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌশলী মাহবুবুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষ সচেষ্ট। আমরা আশা করছি, দ্রুত মামলাটি নিষ্পত্তি হবে। ৯ বছর আগে রমনা বটমূলে বোমা হামলার মামলায় আট জঙ্গির ফাঁসি আর ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) ও জেল আপিল হাইকোর্টে বিচারাধীন।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিলে রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে সকালে একটি শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরিত হয়। এর ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর আরেকটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। ঘটনাস্থলেই নয়জনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালে মারা যান একজন। আর আহত হন ২০ থেকে ২৫ জন। এ ঘটনায় পুলিশ রমনা থানায় পৃথক দুটি মামলা করে।
আসামিদের সবাই নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হুজি-বির শীর্ষস্থানীয় নেতা। শাহাদাত উল্লা হলেন বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত নারায়ণগঞ্জের যুবদলের নেতা মোমিন উল্লা ডেভিডের ছোট ভাই।
বিচারিক আদালত ১৪ আসামিকে দণ্ড দিয়ে রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছিলেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, আতঙ্ক সৃষ্টি করাসহ দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে কলুষিত তথা সংস্কৃতির চর্চা বন্ধ করার জন্য বোমা হামলা করেছিলেন আসামিরা। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত আরও বলেছিলেন, বাঙালি জাতির ঐতিহ্য পয়লা বৈশাখ বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। ২০০১ সালে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় নিহত ব্যক্তিরা সাধারণ মানুষ। এ অনুষ্ঠান কোনো নির্দিষ্ট দল-মত-গোষ্ঠী বা ধর্মের লোকজন ছিল না। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী, নারী-পুরুষ, ছোট-বড়নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার হাজারও মানুষ ওই অনুষ্ঠানে সমবেত হয়েছিল। ওই দিন ভোরে ঘটনাস্থলে দুটি বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল এবং পরে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে বিশেষজ্ঞদের মত। বোমা হামলাকারীদের লক্ষ্য কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ছিল না। আয়োজক সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান।