ঝড়বৃষ্টির আভাসে দুশ্চিন্তায় কৃষক
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/04/30/krishok.jpg)
একদিকে দেশ পুড়ছে তীব্র তাপে। অন্যদিকে, ঝড়বৃষ্টির আভাসে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন কৃষক। কারণ, ক্ষেতের অর্ধেক ধান এখনও কাঁচা। এরই মধ্যে আগামী মাসের শুরুতেই ঝড়-বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। অথচ, ক্ষেতের ফসল ঘরে তুলতে সময় লেগে যাবে ১৫ দিন। কৃষকের ক্ষতির কথা ভেবে ৮০ ভাগ পাকলেই ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১৮ মে ৪৫ দশমিক এক ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড গড়েছিল দেশ। এটা এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের নথিভুক্ত ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। তাপমাত্রার পারদ ৫২ বছরের সেই রেকর্ড যেন ভাঙতে বসেছে এবার। আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) যশোরে ৪৪ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই করছে।
বৈশাখের শুরু থেকেই যশোরে অতিতীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে মানবকূল থেকে শুরু করে গবাদি পশু, ফসলের ক্ষেত এবং সড়কেও। হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যে আজ তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াসে। খুলনা আবহাওয়া অফিস এই তথ্যের পাশাপাশি বলছে, চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত যশোরে, এমনকি দেশেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এটা। এর আগে এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গত সোমবার ছিল ৪২ দশমিক আট ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এই অতিতীব্র তাপপ্রবাহে শহরে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাস্তায় চলাচল করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। যদিও তাপপ্রবাহে অতীষ্ঠ হলেও বৃষ্টি হওয়ার দুশ্চিন্তায় কৃষক। এখন মাঠ থেকে ধান কাটা ও ঘরে তোলার সময়। মাঠে এখনও অর্ধেকের বেশি ধান পাকতে বাকি আছে। এরইমধ্যে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাসে চিন্তায় কাটছে তাদের সময়।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, গতকাল পর্যন্ত যশোর জেলায় ৩৫ থেকে ৪০ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। ধানের কিছু ধরন, যেমন—২৯ এবং কিছু হাইব্রিড ধান দেরিতে রোপন করা হয়েছিল। এসব ধান তুলতে আরও ১৫ দিন লেগে যাবে।
উপপরিচালক আরও বলেন, ঝড়-বৃষ্টি শুরুর আগেই বেশিরভাগ ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। ৮০ ভাগ পাকলেই ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অনেক স্থানে হারভেস্টর দিয়ে ধান কাটা হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমের কারণে অনেক স্থানে বিকেলের পর থেকে রাত পর্যন্ত ধান কাটা হচ্ছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় এক লাখ ৬০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বেশ ভাল। যশোর সদর, চৌগাছা, মণিরামপুর ও শার্শা উপজেলায় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে। অভয়নগরসহ কয়েকটি স্থানে ধান রোপন দেরিতে হওয়ায় সেখানে ধান কাটা শুরু হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।