১৯ শর্তে নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতি পেল বিএনপি
রাজধানীর নয়াপল্টনে নিজেদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ মে) দিনগত রাত ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের পক্ষে উপকমিশনার (অপারেশনস) মো. আবু ইউসুফের সই করা এক লিখিত স্মারকে এ তথ্য জানানো হয়। তবে, অনুমতি দিলেও ১৯টি শর্ত জুড়ে দিয়েছে পুলিশ।
ডিএমপির স্মারকে বলা হয়, আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ শর্ত যথাযথভাবে পালন সাপেক্ষে ১০ মে বিকেল ৩টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির উদ্যোগে সমাবেশ করার অনুমতি প্রদান করা হলো।
শর্তগুলো হলো—
১. এ অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লেখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
৩. অনুমোদিত স্থানের মধ্যেই সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৪. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
৫. অনুমোদিত স্থানের বাইরে বা সড়কের পাশে মাইক/সাউন্ডবক্স ব্যবহার করা যাবে না।
৬. অনুমোদিত স্থানের বাইরে বা সড়কের পাশে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।
৭. অনুমোদিত স্থানের বাইরে রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না।
৮. আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
৯. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আনতে পারে এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।
১০. অনুমোদিত স্থানের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থাতেই সমবেত হওয়াসহ যান ও যান চলাচলে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
১১. সমাবেশ স্থলে পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠি-সোটা, রড ব্যবহার করা যাবে না।
১২. আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।
১৩. রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য প্রদান করা যাবে না।
১৪. উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
১৫. জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে মিছিল সহকারে সমাবেশ স্থলে আসা যাবে না।
১৬. পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং করতে হবে, মূল সড়কে কোনো গাড়ি পার্কিং করা যাবে না।
১৭. সমাবেশস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন।
১৮. উল্লিখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
১৯. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।
এর আগে সমাবেশের অনুমতি নিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ডিএমপির কার্যালয়ে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিএনপির তিনজন জ্যেষ্ঠ নেতা। তিন সদস্যের ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।
প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পর বাইরে বেরিয়ে এসে শুক্রবারের সমাবেশের ব্যাপারে পুলিশের মনোভাব পজিটিভ বলে জানান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম। তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই এই সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিলাম। তবে তাপপ্রবাহের কারণে সেটি পিছিয়ে শুক্রবার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসাসহ নিঃশর্ত মুক্তি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবীসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে এ সমাবেশ ও মিছিল করা হবে।’