ধর্ষণ শেষে হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় অভিযুক্ত দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুর দেড়টায় জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. সোলায়মান এই মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। দুই আসামিকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডও করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া দুই আসামি হলেন আবারক মিয়া ও জয়নাল মিয়া।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ভিকটিম সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলার পৈলনপুর এলাকার মৃত ফরাসত মিয়া মেয়ে রাশেদা বেগম। তিনি ২০১৮ সালের ৩০ মে গরু বিক্রির নগদ ৭০ হাজার নিয়ে ধান কিনতে বাড়ি থেকে বের হন। তাঁর সঙ্গে ওই দিন রাত ৮টা পর্যন্ত মুঠোফোনে পরিবারের সদস্যদের কথা হয়। তিনি জানান, পূর্ব পরিচিত পাশের রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ছিক্কা গ্রামে আবারক মিয়ার বাড়িতে আছেন। এর কিছুক্ষণ পর থেকে মুঠোফোন বন্ধ পান স্বজনরা। পরে বিভিন্ন স্থানে তাঁকে খোঁজাখুঁজি করেন পরিবারে সদস্যরা। এরপর রাজনগর থানা পুলিশ ২ জুন বিকেল ৩টায় আবারক মিয়ার বাড়ির পাশে মাছুগাঙ্গ খাল থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
খবর পেয়ে নিহত রাশেদা বেগমের স্বামী গিয়াস উদ্দিন ও বড় ভাই আব্দুল খালিদ হাসপাতালে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন। এ বিষয়ে বড় ভাই আব্দুল খালিদ ২ জুন রাতে রাজনগর থানায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামি করে মামলা করেন। রাজনগর থানার তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল বনিক মামলটি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেন উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালামকে। ৩ জুন পুলিশ আসামি আবারক মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। আবারকের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অপর আসামি জয়নাল মিয়াকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালান তিনি। আসামি জয়নাল পলাতক থাকায় ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন এসআই। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ শেষে রাশেদাকে হত্যা করা হয় বলে জানা যায়।
দীর্ঘ শুনানি শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। এরপর দুই আসামিকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট নিখিল রঞ্জন দাশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সানোয়ার হোসেন ও অ্যাডভোকেট বিল্লাল হোসেন।