ছেলে সেজে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে ফেসবুকে প্রেম, অতঃপর ধরা
ফেসবুকে পরিচয়। অতঃপর একে অপরকে ভালোলাগা, ভালোবাসা। দেড় বছরের সম্পর্কের একপর্যায় দুজন সিদ্ধান্ত নেয় বাড়ি ছেড়ে দূর অজানায় পালানোর। যেই কথা সেই কাজ। তবে বাড়ি ছাড়ার তিন দিন পর স্কুলছাত্রী জানতে পারল যার সঙ্গে ঘরবাঁধার স্বপ্নে বিভোর হয়ে ঘর ছেড়েছে সে-ও তারই মতো নারী!
এ ঘটনা ঘটেছে মুন্সীগঞ্জের এক মেয়ের সঙ্গে বরিশালের এক। তবে পরিবারের প্রচেষ্টায় মুন্সীগঞ্জের প্রেমিকা ও বরিশালের প্রেমিক দুই মেয়েকেই আজ বুধবার (১৫ মে) ভোরে ফিরেয়ে আনা হয়েছে। এমন কণ্ডে এলাকায় তৈরি হয় চাঞ্চল্য।
জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ সদরের ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে ফেসবুকে বরিশালের আফরান আহমেদ নামের ফেসবুক আইডির (মেয়ে) পরিচয় হয় প্রায় দুই বছর আগে। স্কুলছাত্রী বুঝতে না পেরে ছেলেরূপী ওই মেয়ের সঙ্গেই চালিয়ে যায় প্রেম। গত ১২ মে সে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। বরিশাল থেকে লঞ্চে ঢাকায় আসে মেয়ে প্রেমিক, তারপর দুজনের দেখা হয় রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায়। এরপর ঘরবাঁধার স্বপ্নে প্রথমে লঞ্চে উঠার চেষ্টা। পরে লঞ্চ না পেয়ে বরিশালের বাসে উঠে তারা। বাসে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায় তারা। বাসে ঘোরাঘুরির একপর্যায়ে টাকা শেষ হয়ে গেলে স্কুলছাত্রীর আত্মীয়র বাসায় গেলে তাদের ধরে ফেলে বাড়ির লোকজন। এ সময় প্রেমিক যে নারী সেটি বেরিয়ে আসে। এরপর আজ সকালে তাদের দুজনকে মুন্সীগঞ্জে নিয়ে আসে স্কুলছাত্রীর পরিবার।
এরপর বাড়ির লোকজন তল্লাশি করে নারী প্রেমিকের কাছে পাঁচটি সিম ও ১০টি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট দেখতে পায়। প্রেমিক মেয়েটি নারী পাচারে জড়িত কি না তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছে স্থানীয়রা।
স্কুলছাত্রীর দাদা জানান, দুজনকে যখন ধরা হয় তখন বরিশালের মেয়েটির নাকে ব্যান্ডেজ করা ছিল। সেটি খোলার পর নাকে রিং পরার ছিদ্র দেখে তাদের সন্দেহ হয়। তখন তারা বুঝতে পারে প্রেমিক আসলে মেয়ে। এ সময় সে নিজের পরিচয় ও বাড়ির ঠিকানা দেয়।
এ বিষয়ে প্রেমিক মেয়েটি সাংবাদিকদের কাছে দাবি করে, ফেসবুকে একটি গ্রুপে তাদের পরিচয়। প্রথমে বন্ধুর মতোই কথা বলে সিরিয়াস কিছু ছিল না। হয়তো তার মধ্যে কোনো একটা প্রবলেম আছে। কথা বলতে বলতে বন্ধুত্ব এরপর সম্পর্কে জড়ায়। সে যদি নারী পাচারকারী হতো তাহলে তিন দিনেই কিছু করতে পারত।
বরিশালের মেয়েটি বলে, ‘আমরা রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছিলাম, ঠিকঠাক মতো খাওয়া দাওয়া হচ্ছিল না। তখন আমি ওকে বলেছিলাম মুন্সীগঞ্জ চলে যাও। কিন্তু আমার একটক ভুল হয়েছে, আমি ওকে বলিনি আমি ছেলে না মেয়ে।’