বাসে জাবি ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, জড়িতদের শাস্তির দাবি
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী মৌমিতা পরিবহণ বাসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুর স্বাক্ষর করা যৌথ বিবৃতিতে ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী মৌমিতা পরিবহণ বাসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকা থেকে টিউশন শেষে মৌমিতা পরিবহণের একটি বাসে করে ক্যাম্পাসে ফিরছেলেন। এ সময় ওই ছাত্রী হেলপারকে ভাড়া দিলে, হেলপার ভাঙতি নেই দেখে পরে দেবে বলে জানায়। বাসটি সাভারের রেডিও কলোনি এলাকায় আসলে থেমে যায় এবং সব যাত্রীদের বাস থেকে নেমে যাওয়ার জন্য বলে। তখন ওই ছাত্রী বাকি টাকা ফেরত চাইলে বাসের হেলপার তার সঙ্গে খারাপ ভাষায় কথা বলে এবং তার দিকে বাজে ইঙ্গিত দেয়।
বাসচালক ওই ছাত্রীকে একা রেখেই বাস চালাতে শুরু করে। ওই ছাত্রী ভয় পেয়ে বাস থেকে লাফ দেয় এবং পায়ে আঘাত পায়। পরে ক্যাম্পাসে গিয়ে নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা নেয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়।
সম্প্রতি রাস্তাঘাটে চলাচলের পথে গণপরিবহণে নারী ও কন্যারা যৌন হয়রানি ও যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছে। যাতায়াতের পথে নারী ও কন্যাদের প্রতি সংঘটিত এসব ঘটনা তাদের স্বাধীনভাবে চলাচলের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে ও তাদের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা নারী ও কন্যাদের স্বাভাবিক জীবনে প্রভাব ফেলছে এবং তাদের অগ্রযাত্রার পথে প্রতিবন্ধকতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মহিলা পরিষদ এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে বাস মালিক সমিতি, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে এসব ঘটনা গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিয়ে যথাযথ দায়িত্ব পালনের দাবি জানাচ্ছে।
মহিলা পরিষদ জাবি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে। সেই সঙ্গে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজকে যুক্ত করে সমন্বিত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলার আহ্বান জানাচ্ছে।